জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়ালে হিতে বিপরীত হবে : নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতার লোভে কোনো দল বা কোনো শক্তি যদি মনে করে তারা এককভাবে সবকিছু করবে, এই জাতীয় ঐক্য ভেঙে দেবে বা জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়াবে, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। তারা সংসদ টেকাতে পারবে না। সরকার টেকাতে তাদের কষ্ট হবে। জনগণের যে আস্থা সেই আস্থা তারা পাবে না।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। জুলাই সনদ যেদিন স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয় সেদিনই আমরা স্পষ্ট করেছি। আমরা বলেছি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান কেবলই একটা আনুষ্ঠানিকতা। কেবলই কাগজে সাইন। যার মূল্য কেবলই কাগুজে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা ৯০-এর গণঅভ্যুত্থ্যানের পরও ত্রিদলীয় জোটের রূপরেখা দেখেছিলাম। যেটা মূলত ছিল জনগণের সঙ্গে একটা প্রতারণা। ৯০-এর পুনরাবৃত্তি আমরা আর বাংলাদেশে হতে দেব না। এ কারণে আমরা এখনো সনদ স্বাক্ষর করিনি। আমরা বলেছি আমরা স্বাক্ষর করতে চাই।
শাপলা প্রতীক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাপলা না দেওয়ার বিষয়টা নির্বাচন কমিশনের একটা স্বেচ্ছাচারিতা। নির্বাচন কমিশন কোনো ধরনের ব্যাখ্যা ছাড়াই তাদের মনোবাসনা চাপিয়ে দিতে চায়। আমরা ধরে নেব নির্বাচন কমিশন অন্য কোনো শক্তি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। নির্বাচন কমিশন ন্যায়বিচার করতে সক্ষম নয়। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে না। গায়ের জোরে পরিচালতি হচ্ছে। ফলে এ ধরনের একটা নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না সে বিষয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন তৈরি হবে। আমাদের মনেও প্রশ্ন তৈরি হবে। কিন্তু আমরা বলছি- শাপলা নিয়ে যদি আমাদের আইনি ও সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, তাহলে আমরা যেকোনো প্রতীক নিতে প্রস্তুত আছি।
আরও পড়ুননাহিদ বলেন, আমরা মনে করছি এখানে আইনি কোনো বাধা নেই। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে এটি আদায় করে নিতে হচ্ছে। যদি নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়ার একটা পরিকল্পনা বা ষড়যন্ত্র হিসেবে দেওয়া না হয় তাহলে রাজপথই আমাদের একমাত্র জায়গা হবে। কিন্তু আমরা সেটা চাই না। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে ইলেকশনের মধ্য দিয়ে সামনের দিকে আগাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। যদি আমাদের জোটে যেতে হয়, জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাহলে অবশ্যই একটা নীতিগত জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত আসবে। জুলাই সনদ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক জায়গা। জুলাই সনদ বা সংস্কার বিষয়ে আমরা দেখব কারা বাংলাদেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে এবং আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। সেই জায়গা থেকে জোটের বিষয়ে বা কোনো ধরনের নির্বাচনী সমঝোতার বিষয়ে আমরা চিন্তা করতে পারি না। কিন্তু যদি সংস্কারের বিপক্ষে কেউ দাঁড়ায়, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের যেরকম আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে এই ধরনের কোনো শক্তির সঙ্গে জোটে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অনেকবার ভাবতে হবে।
আগামী নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেব্রুয়ারির যে টাইম লাইন ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে নির্বাচন হোক। নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি না হয়। সেজন্য সব পক্ষকে কাজ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী যারা রয়েছে, যারা পতিত শক্তি রয়েছে, তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। নির্বাচনকে ঘিরে তাদের অনেক বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে।
মন্তব্য করুন


_medium_1761671451.jpg)






