ভিডিও বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫

পাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা

পাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা

বাংলাদেশের তিন পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিবেশি দেশের ইন্ধনে আবারও নতুন করে অশান্তি গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়িতে কথিত স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ তুলে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো তিন পার্বত্য জেলায় জ্বালাও-পোড়াও, হামলা, অবরোধ চালিয়ে পাহাড়কে উত্তপ্ত করার নীল নকশা বাস্তবায়নে ব্যস্ত।

কথিত ধর্ষণের ঘটনায় সহিংসতাকে কেন্দ্র করে রোববার তিনজন নিহত হয়। নিহতরা হলেন, গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের আথ্রাউ মারমা (২৪), লিচু বাগান এলাকার আথুইপ্রু মারমা (২৬) ও বটতলা পাহাড় থোয়াইচিং মারমা (২৪), রাতে আইএসপিআর জানিয়েছে, পাহাড়ি দুর্বৃত্তের গুলিতে রোববার গুইমারার রামসু বাজার এলাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। এদিকে কথিত ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র সংগঠনগুলোর অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চলছে।

খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় প্রশাসন আহুত ১৪৪ ধারা এখনো বহাল রয়েছে। আগের মতোই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। সেনাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি বিজিবি, পুলিশ মাঠে রয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, উদ্ভুত অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে। সোমবার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। খাগড়াছড়িতে একটি মহল পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব চলছে। এ উৎসব সফলভাবে সম্পন্ন করতে সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু এ উৎসব যেন ভালোভাবে এবং ধর্মীয় উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে সম্পন্ন করতে না পারে, এই জন্য একটি মহল খাগড়াছড়িতে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। ভারতের ইন্ধনে বা ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কিছু সন্ত্রাসী পাহাড়ের উপর থেকে ফায়ার করছে।

এই হাতিয়ারগুলো বাইরে থেকে আসছে। সরকার সতর্ক আছে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায়। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে এ সময় ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আমরা মনে করি, পাহাড় থেকে সকল ধরনের দেশবিরোধী চক্র ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

আরও পড়ুন

সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, রাঙামাটি, কক্সবাজার পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের তৎপরতা জনমনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর পাহাড়ি অঞ্চলে ভারত সমর্থিত সশস্ত্র পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা আরও বেড়েছে। গহিন জঙ্গলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আস্তানা গড়ে তুলেছে। তাদের সশস্ত্র ট্রেনিং ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

চাঁদাবাজি, অপহরণ, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ- পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নিত্য দিনের কর্মকান্ডে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে এরা সব সময় একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পাহাড়কে শান্ত স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ইতিপূর্বে প্রত্যাহারকৃত সেনা নিরাপত্তা চৌকিগুলো পুন:স্থাপন করতে হবে।

এটা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য খুবই জরুরি। এখানে চিরুনি অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালাতে হবে নিয়মিতভাবে।  গহিন জঙ্গলে এদের আস্তানা গুড়িয়ে দিতে হবে। পাহাড়কে শান্ত স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই সন্ত্রাসী, দেশবিরোধী গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।

এক সময় ভারত সৃষ্ট শান্তিবাহিনীর অপতৎপরতায় স্থানীয় জনগণ আতঙ্কে ছিল। সে আতঙ্ক কমে গেছে। এখন যে বা যারা সন্ত্রাসীদের মদদে আছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। জনগণ সন্ত্রাসী বাহিনীর যাবতীয় তৎপরতা ধ্বংস করে এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখতে চায়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়া শহরে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করল পুলিশ

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দাবিসমূহ পর্যায়ক্রমে পূরণ করা সম্ভব : তথ্য উপদেষ্টা  

ইলিশ রক্ষায় পুলিশ, নৌ-বাহিনী ছাড়াও বিমানবাহিনী ড্রোন দিয়ে কাজ করবে: মৎস উপদেষ্টা

সব স্বাভাবিক হলেই ১৪৪ ধারা তুলে নেয়া হবে: খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক

বগুড়ার শেরপুরে টানা বৃষ্টিতে মহাসড়ক ও বসতবাড়িতে হাটু পানি

মাদরাসায় পড়েছি, এটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন: ধর্ম উপদেষ্টা