জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে গভীর নলকূপের ড্রেনম্যান ও পাহারাদারকে গলাকেটে হত্যা

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের কলিংগা গ্রামের কালাইগামাঠে গভীর নলকূপের ড্রেনম্যান ও পাহারাদার আবু সাইদ ফকির (৬৫) কে দুর্বৃত্তরা গলাকেটে হত্যা করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কলিংগা গ্রামের নুর মোহাম্মদের গভীর নলকূপে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত আবু সাইদ ফকির উপজেলার বেলগাড়ী গ্রামের মৃত ইয়াছ ফকিরের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন প্রায় ৪০ বছর ধরে আবু সাইদ ফকির ওই গভীর নলকূপে ড্রেনম্যান এবং রাতে পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাতে তিনি প্রতিদিনের ন্যায় ওই গভীর নলকূপে রাতে পাহারাদার হিসাবে সেখানে রাত যাপন করতে যান। গতকাল শুক্রবার সকালে পাহারাদার আবু সাঈদ সময়মতো তার নিজ বাড়ি বেলগাড়ী গ্রামে না আসায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে গভীর নলকূপে গিয়ে আবু সাঈদ এর মরদেহ দেখতে পায়। কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে এলাকাবাসী ও পরিবারের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তরা আবু সাঈদ ফকিরকে হত্যা করেছে। নিহতের জামাই গাফফার ফকির বলেন, গভীর নলকূপে রাত যাপন করার পর প্রতিদিন সকালে তিনি বাড়িতে আসেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে না আসার কারণে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলে ফোনে তাকে না পেয়ে অবশেষে আমি ওই গভীর নলকূপে যাই।
সেখানে গিয়ে ওই গভীর নলকূপের ঘরের দরজা খোলা অবস্থায় চৌকির উপর আমার শ্বশুরের হাত পা বাঁধাসহ রক্তাক্ত অবস্থায় মরদেহ দেখতে পাই। দীর্ঘ কয়েক মাস আগে ওই গভীর নলকূপের ট্রান্সফর্মা চুরি হয়েছিল। চুরির দিন আমার শ্বশুর অসুস্থতার কারণে পাহারা দিতে না যাওয়ায় গভীর নলকূপের মালিক পক্ষরা আমার শ্বশুরকে সতর্ক করে। তার কিছুদিন পর শ্বশুরের রোপা ধানে বিষাক্ত আগাছানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে ২০ শতক জমির ধান নষ্ট করা হয়েছে। এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মনোমালিন্য রয়েছে।
আরও পড়ুনগভীর নলকূপ মালিক নূর মোহাম্মদকে না পেয়ে অবশেষে তার ছেলে আহম্মদ আলী বলেন, রাত ৯ টার পর আমি ওনাকে ফোন দিয়েছি কিন্তু রিসিভ হয়নি। পরে একাধিকবার ফোন দিয়ে মোবাইল বন্ধ পাই। শুক্রবার সকালে লোক মাধ্যমে জানতে পারি পাহারাদার আবু সাঈদকে মেরে ফেলা হয়েছে। পরে আমি থানায় অবহিত করি।
ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল করিম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ সহ আইন শৃঙখলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। প্রকৃত অপরাধী ও হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন