ভিডিও শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রংপুরের পীরগাছায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও চরম লোকসানে চাষিরা

রংপুরের পীরগাছায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও চরম লোকসানে চাষিরা

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি : আলু চাষে প্রসিদ্ধ রংপুরের পীরগাছায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই চাষির মুখে। বাজারে দাম না থাকায় আগাম আলু নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরা। পানির দামে বিক্রি করা হচ্ছে আগাম জাতের আলু। এতে করে উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকদের। গতবছরের তুলনায় কেজি প্রতি আলুর দাম অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। ফলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন আলু চাষি।

 এবারও লোকসানের পাল্লা ভারি হওয়ায় আলুচাষিদের চোখে-মুখে দেখা দিয়েছে আতঙ্কের ছাপ। গত সোমবার পীরগাছা উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে মতে, এ বছর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ১৩ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের দাবি, এ বছর ২০ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। যা বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড পরিমাণ। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়।

বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের আলুর আকাশচুম্বি দাম থাকায় লোভে পড়ে এ বছর অধিক পরিমাণ আলু চাষ করা হয়। প্রতি কেজি আলুর বীজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে নিয়ে আলু রোপণ করেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আলুর ফলনও বেশ ভালো। কিন্তু আগাম জাতের আলু উত্তোলন করে কৃষকরা এখন অন্য ফসল রোপণ করবেন। এদিকে কোল্ড স্টোরেজগুলো এখনও খোলা হয়নি। ফলে উভয় সংকটে পড়ে কৃষকরা এখন পানির দামে আলু বিক্রি করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি ইষ্ট্রিক জাতের আলু ১০ টাকা, সেভেন জাতের আলু ৭ থেকে ৮ টাকা, লাল পাকরি জাতের আলু ১২ থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা গতবছর ছিল ইষ্ট্রিক জাতের আলু ২৫ থেকে ২৭ টাকা, সেভেন জাতের আলু ২২ থেকে ২৫ টাকা এবং লাল পাকরি জাতের আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল ও বিভিন্ন ইউনিয়নে উঁচু জমিগুলোতে আগাম জাতের আলু বেশি চাষ করা হয়েছে। এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু চাষ হওয়ায় প্রথম থেকে আলুর বাজারে ধস নামে।  নয়ারহাট এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, এ বছর আলুর ফলন বাম্পার হলেও বাজারে তেমন দাম নেই। আগাম আলু সংরক্ষণ ও বাইরে রপ্তানির কোন সুযোগ না থাকায় আমরা দাম পাচ্ছি না। এক লিটার পানির দাম ২০ টাকা আর এক কেজি আলু ১০ টাকা। ফলে আলু চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আরও পড়ুন

পীরগাছা বাজারের বিশিষ্ট আলু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছরে তুলনায় অধিক পরিমাণ জমিতে আলু চাষ এবং উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে দাম নেই। লোভে পড়ে মানুষ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বীজ কিনে আলু লাগিয়েছে। যা এখন ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি। কৃষকদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। তবে কোল্ড স্টোরেজ খোলা হলে কিছুটা দাম বাড়বে।

এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর পীরগাছায় রেকর্ড পরিমাণ আলু চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো। তবে আগাম জাতের আলু সংরক্ষণের কোন সুযোগ নেই। আর বোরো চাষাবাদের জন্য কৃষকরা আলু উত্তোলন করছে। সব মিলিয়ে বাজারে দাম কম। তবে আলু সংরক্ষণ করে রাখা হলে পরে দাম বাড়তে পারে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে: আলী রীয়াজ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে দুই শিক্ষক ১১ মাস থেকে বেতন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন 

সাম্প্রতিক সময়ের দর্শকপ্রিয় চার সিনেমায় আলোচিত নার্গিস

বগুড়া দুপচাঁচিয়ায় এক কেজি গাঁজাসহ ১ জন গ্রেফতার

তাদের চাঁদাবাজিতে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ: ফয়জুল করীম

বগুড়ার সোনাতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১