হিমাগারে অবিক্রিত ৯ লাখ টনের বেশি আলু
রংপুর অঞ্চলে আলুতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের এবার দুই হাজার কোটি টাকা লোকসান
রংপুর প্রতিনিধি : চলতি মৌসুমে হিমাগারে মজুত আলু বিক্রি না হওয়ায় রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বড় ধাক্কায়। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের হিসাব অনুযায়ী, এবার হিমায়িত আলুতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার লোকসান হবে। তাদের অভিযোগ, সরকারের নির্ধারিত ২২ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। ফলে কৃষকেরা এখন দিশেহারা। সংসার খরচ চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে রংপুর কৃষি অঞ্চলে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৯ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, উৎপাদন ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন। বিক্রির পরও বিভাগের ১১৬টি হিমাগারে এখনও মজুত আছে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৩ মেট্রিক টন আলু।
কৃষকরা জানান, প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে পড়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য খরচ যোগ হয়েছে আরও ৭ টাকা। অথচ বর্তমানে আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৯ থেকে সাড়ে ৯ টাকা কেজিতে। ফলে প্রতি কেজিতে লোকসান গড়ে ১৮ থেকে ২০ টাকা।
গঙ্গাচড়া উপজেলার আলুচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে পড়েছি আলুর দাম এত কম যে সংসার চালানোই এখন কষ্টের। আগামী মৌসুমে চাষের টাকাও হাতে নেই। সরকার গত ২৭ আগস্ট হিমাগার থেকে আলুর দাম কেজিপ্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও, বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি।
রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এন.এম. আলমগীর বাদশা বলেন, যারা আলু বিক্রি করতে চান, তারা ক্রেতা পাচ্ছেন না। বিক্রি কম হওয়ায় নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। রংপুর কৃষান হিমাগারের ম্যানেজার মাজেদুল ইসলাম বলেন, সরকারি তেমন কোনো পদক্ষেপ না থাকায় আলু খালাস না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে কৃষকের পাশাপাশি হিমাগারগুলোরও ক্ষতি হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আলুর বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন, পরিকল্পিত চাষ ব্যবস্থা, রপ্তানি বাজারে নতুন পথ খোঁজা, দেশীয় আলুর চাহিদা বাড়াতে সরকারি উদ্যোগ।
আরও পড়ুনউৎপাদিত : ৩২.৩০ লাখ মেট্রিক টন, হিমাগারে
মজুত : ৯.৩৬ লাখ টন
বাজারদর : ৯.৫ টাকা/কেজি
উৎপাদন খরচ : ২৭ থেকে ২৯ টাকা/কেজি
লোকসান : প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন









