জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌরসভার ৩৫০টি পানির মিটার চুরি, সাপ্লাই শুরু হতে না হতেই

দুলাল অধিকারী (বাগজানা) : জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পৌরসভায় স্থাপিত সাপ্লাই লাইনে পূর্ণভাবে পানি সরবরাহ না হতেই রিডিং মিটার চুরির হিড়িক পড়েছে। গত এক মাসে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রায় ৩৫০টি মিটার চুরি হয়েছে। প্রতিদিনই এসব মিটার চুরির ঘটনা ঘটলেও রহস্যজনকভাবে চোরেরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। এ নিয়ে পৌরবাসীর মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে!
জানা যায়, পৌর এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ ও উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে পাঁচবিবি পৌরসভায় এ প্রকল্প শুরু হয়। প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ের ২০২৪ সালে এ প্রকল্পটিতে পৌর এলাকায় ২৬১৭টি মিটারের মাধ্যমে সমসংখ্যক সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে পানি সরবরাহ লাইনের সংযোগ প্রদান করা হয়।
রিডিং নেয়ার সুবিধার্থে অধিকাংশ পানির মিটারগুলো বাসাবাড়ির বাইরে স্থাপন করা হয়। বাড়ির বাইরে ও এগুলোর কারিগরি সিস্টেম সহজ হওয়ায় চোরেরা খুব সহজেই মিটারগুলো চুরি করছে। নিত্যদিন মিটার চুরির ঘটনা ঘটলেও চুরিরোধে কার্যত কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্রমেই তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পৌর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত তিন সপ্তাহে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড থেকে ২৫টি, ২নং ওয়ার্ড থেকে ৩০টি, ৩নং ওয়ার্ড থেকে ৬৭টি, ৪নং ওয়ার্ড থেকে ৩৮টি, ৫নং ওয়ার্ড থেকে ৫০টি, ৬নং ওয়ার্ড থেকে ২৭টি, ৭নং ওয়ার্ড থেকে ৩০টি, ৮নং ওয়ার্ড থেকে ৩২টি, ও ৯নং ওয়ার্ড থেকে ৫১টিসহ মোট ৩৫০টি মিটার চুরি হয়েছে।
আরও পড়ুনদমদমা গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন সাজা বলেন, আমার পানির মিটারটি ছিল বাসার গেটের বাইরে, গতরাতে দেখি মিটারটি চুরি হয়ে গেছে। বাসা বাড়ির বাহিরে মিটার থাকার কারণে চোরেরা সহজেই মিটার চুরি করছে। তবে মিটারগুলো বাসাবাড়ির বাহিরে স্থাপন করাটা প্রকল্প পরিকল্পনায় ভুল ছিল বলে তিনি জানান।
পৌরসভার কর্মচারী জিল্লুর রহমান বলেন, পানির মিটার চুরির ঘটনা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে, আমরা আতঙ্কে আছি। চুরি হওয়া মিটার বাসাগুলোতে এখন রিডিং করতে পাচ্ছি না। পৌরসভার সাব এ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মারুফ হোসেন বলেন, পানির মিটারগুলো প্রতিটির দাম ৫/৬ হাজার টাকা হলেও এখানে বেচা-কেনা হয় না, তবে ভাঙরি দোকানে বেচাকেনা হতে পারে, আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ নিয়ামুল হক বলেন, পানির মিটার চুরির বিষয়টি আমরা জেনেছি, চুরিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, রাতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে, মহল্লাতে ডিউটি চালু করতে বলা হয়েছে, সম্ভবত এসব নেশাখোরদের কাজ হবে।
মন্তব্য করুন