ভিডিও বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে এটা কি পূর্বনির্ধারিত, নাকি কর্মের ফল?

কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে এটা কি পূর্বনির্ধারিত, নাকি কর্মের ফল?

বিয়ে মানুষকে শালীন, পবিত্র ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনের পথে নিয়ে যায়। মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই বিয়ের বিধান চলে আসছে। ইসলামে বিয়েকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় একটি ইবাদত হিসেবে বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে এবং বিয়ের সামর্থ্য রাখে, তার জন্য দেরি না করে বিয়ে করা ইমানি দায়িত্ব।

নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, তার বিয়ে করা উচিত। কেননা বিয়ে চোখকে নিচু রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা যৌবনের খায়েশ কমিয়ে দেয়।’ (বোখারি : ৫০৬৫, মুসলিম : ১৪০০)

এই হাদিস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, বিয়ে করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো তারিখ, দিন বা মাস ঠিক করে দেওয়া হয়নি; বরং সামর্থ্য হলে দেরি না করে বিয়ে করে নেওয়াই উত্তম। বিয়ের বিষয় সামনে আসতেই আমাদের অনেকের মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায় যে, ‘কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে এটি কি পূর্বনির্ধারিত নাকি কর্মের ফল?’

এ প্রসঙ্গে রাজধানীর জামিয়াতুল ইসলামিয়া বায়তুস সালাম মাদ্রাসার ফতোয়া বিভাগীয় প্রধান মুফতি আব্দুর রহমান হোসাইনীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সবই তাকদিরে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। কার সঙ্গে বিয়ে হবে, কে কখন মৃত্যুবরণ করবে, কোথায় চাকরি করবে, কোথায় কখন কী খাবে ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় তাকদিরে লেখা হয়ে গেছে। কিন্তু তাকদিরে কী লেখা আছে সেটা মানুষ জানে না।’

‘এজন্য ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তাকদির পরিবর্তন করা যাবে কি না—এই চিন্তা করাই নিরর্থক। বরং এক্ষেত্রে ইসলামের দিকনির্দেশনা হলো, তাকদিরে লেখা থাকা সত্ত্বেও শরিয়ত নির্দেশিত বৈধ উপায়ে চেষ্টা করা এবং কায়মনোবাক্যে একাগ্রতার সঙ্গে রাব্বে কারিমের কাছে দোয়া করা। কারণ মহান আল্লাহর হুকুম ও দোয়ায় তাকদির পরিবর্তন হতে পারে।’

আরও পড়ুন

মুফতি আব্দুর রহমান আরো বলেন, ‘তা ছাড়া এমনো হতে পারে যে, তাকদিরে লেখা আছে, চেষ্টা করলে অর্জন হবে কিংবা দোয়া করলে অর্জন হবে। এমতাবস্থায় যদি তাকদিরে লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে—এই কথা চিন্তা করে চেষ্টা ও দোয়া করা না হয়, তাহলে চেষ্টা ও দোয়া না করার কারণে কাঙ্ক্ষিত অর্জন থেকে বঞ্চিত হতে হবে।’

‘অতএব, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো পুণ্যবতী নারীকে বিয়ে করতে চায়, তাহলে শরিয়তের সীমারেখার মধ্যে থেকে, সামাজিক রীতি-নীতি মেনে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এবং দোয়া চালিয়ে যেতে হবে।’

ইসলামি এই স্কলার আরও বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, মহান আল্লাহ মানুষকে পাথরের মতো একেবারে অসহায় ও অচল করে সৃষ্টি করেন নাই যে, সে কোনো চেষ্টা-তদবির করবে না। বরং মহান আল্লাহ মানুষকে নির্দিষ্ট কর্মক্ষমতা ও ইচ্ছা শক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এজন্য চেষ্টা ও উত্তম উপায় অবলম্বন করার দায়িত্ব তিনি মানুষের ওপর দিয়েছেন।’

‘অতএব কার বিয়ে কার সাথে হবে—এটা তাকদিরে লিপিবদ্ধ থাকলেও চেষ্টা ও উত্তম উপায় অবলম্বন করে ভালো জীবন সঙ্গিনী খোঁজ করা এবং এর জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করার কোনো বিকল্প নেই।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে প্রস্তাবিত টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপন নিয়ে উত্তেজনা

সেন্টমার্টিনে ৫ ট্রলারসহ ৩০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

পর্যটন কেন্দ্রের অপার সম্ভাবনার নাম সুজানগরের গাজনার বিল

এশিয়া কাপে বৃহস্পতিবার হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ

কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিজিবির অভিযান সাতদিনে ২ কোটি ১১ লাখ টাকার মাদকসহ অবৈধ মালামাল জব্দ

কমলো জেট ফুয়েলের দাম