এইচএসসিতে বগুড়ার যেসব প্রতিষ্ঠান ভালো করেছে
_original_1760632377.jpg)
করতোয়া ডেস্ক: বগুড়ার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বরাবরের মত এবারও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেও বিগত বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা পিছিয়েছে। বগুড়াসহ আশেপাশের উপজেলার ফলাফল দেওয়া হলো।
সরকারি আজিজুল হক কলেজ বগুড়া: রাজশাহী বিভাগের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় ১ হাজার ৪৮২জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৪৭২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৯২ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৪৬ জন, মানবিক বিভাগ পেয়েছে ১৭৮ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ জন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিন বিভাগে এবছর ১০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে।
ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বগুড়া: উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এ বছর ৬৮১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে শতভাগ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯২জন। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫১৯ জন পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৭ জন। মানবিক বিভাগ থেকে ১২৮জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৩৪জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫জন। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কর্নেল মোঃ মাসুদ রানা পিএসসি, পিএইচডি ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের ফলাফল অর্জনের পেছনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবার অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। তিনি আগামীতে এই ফলাফল অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন।
সরকারি মজিবর রহমান ভান্ডারী মহিলা কলেজ বগুড়া: বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের নারী শিক্ষার স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠান থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ১ হাজার ৪২২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১২শ’ ৮১ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০৬ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৬৮০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৬৪৯জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৫ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৫৪১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৪৯৫জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৯ জন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৩৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
সরকারি শাহ সুলতান কলেজ বগুড়া: এই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৩৭৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৩৫১ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪০৫ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২০ জন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৪ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক জন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে অকৃতকার্য হয়েছে ১৫৪ জন।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ বগুড়া: বগুড়া শহরের মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান থেকে এবছর ৪৬৮ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৪৬৬ জন পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৭জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৫ জন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবা হক পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করার জন্য শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী, অভিভাবক, গভর্নিং বডির সভাপতিসহ সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই ফলাফল। আগামীতে আরও ভাল ফলাফল অর্জন করার জন্য তিনি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ বগুড়া: উত্তরাঞ্চলের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান থেকে এবছর ২৬৭ জন পরিক্ষার্থী অংশ নেয়। পাস করেছে ২৬৬জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৬ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৩ জন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। এই তিন বিভাগ থেকে এ গ্রেড পেয়েছে ১১৬ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। গত বছর ২০২৪ সালে এই প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫৪ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২২৪ জন। ছাত্রছাত্রীদের এই ফলাফলে অধ্যক্ষ মো: মুস্তাফিজুর রহমান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের এ্ ভিন্ন চিত্র একটি ম্যাসেজ হলো প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আরও সচেতন ও যত্নশীল হতে হবে। শিক্ষার্থী যেন যোগ্য হয়েই পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বগুড়া: স্বনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৩৭১ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৫০ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ -৫ পেয়েছে ১০ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ১১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই দুই বিভাগ থেকে এ গ্রেড পেয়েছে ২০৮ জন। এ মাইনাস পেয়েছে ১০০ জন। বি পেয়েছে ২০জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া: এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৩৫২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৩৪৬ জন। পাসের হার ৯৮.৩০। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫৮ জন শিক্ষার্থী। এছাড়াও এ গ্রেডে পাস করেছে ২৪৫ জন, এ মাইনাস ২৯, বি ১২ এবং ২ জন শিক্ষার্থী সি গ্রেড পেয়ে পাস করেছে। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ জন।
আরও পড়ুনবগুড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজ : এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩২৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করে ৩১০ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ৭ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পায়নি একজনও, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। এর আগে ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৪৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৫৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
মিলেনিয়াম স্কলাস্টিক স্কুল এন্ড কলেজ বগুড়া (ইংরেজি ও বাংলা ভার্সন) : এই প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি ভার্সন থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় ৫৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ২৩ জন এ গ্রেড পেয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ২ জন এ গ্রেড পেয়েছে, এ মাইনাস পেয়েছে ৩ জন। অন্যদিকে এবারই প্রথম এই প্রতিষ্ঠান থেকে বংলা ভার্সনের ১ম ব্যাচে ৫ জন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন। বাকি ৪জন এ গ্রেড পেয়েছে।
আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ বগুড়া : এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১৮৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে । এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ জন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন। এ গ্রেড পেয়েছে ১৩৫ জন।
টিএমএসএস পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ বগুড়া : এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ১৪৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৯ জন। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিন বিভাগ থেকে এ গ্রেড পেয়েছে ৮৯ জন। গতবছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১০৪ জন।
জাহিদুর রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজ বগুড়া : এই প্রতিষ্ঠান থেকে ২২১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেছে ১৭৩ জন। পাসের হার ৭৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। এই প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ জিপিএ-৫ পায়নি। মানবিকে পাস করেছে ১৫৫ জন, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছে ১৭ জনএবং ব্যবসায় শিক্ষায় পাস করেছে ১ জন।
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) : দুপচাঁচিয়া উপজেলায় প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উপজেলার ৯টি কলেজের মধ্যে ৪টি থেকে জিপি-এ ৫ পেয়েছে ৮২ জন। এর মধ্যে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৬৯ জন জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলার শীর্ষে রয়েছে।
সোনাতলা (বগুড়া) : সোনাতলায় এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে। ফল বিপর্যয়ের মধ্যে উপজেলার বালুয়াহাট ডিগ্রি কলেজ অন্যতম। ওই কলেজের ৭৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র তিনজন। চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফল বিপর্যয় হওয়ায় অভিভাবকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অভিভাবকদের অভিযোগ এসব কলেজে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগের ফলে লেখাপড়ার মান কমেছে। পাশাপাশি কলেজগুলোতে ঠিকঠাক মতো ক্লাস না হওয়ায় এ ধরনের ফল বিপর্যয় হয়েছে।
শেরপুর (বগুড়া) : শেরপুরে এবারের এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার ফলাফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে শেরউড ইন্টারন্যাশনাল (প্রা.) স্কুল এন্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ২৮৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই পাশ করার পাশাপাশি ১৮৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়াও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে ১৮৭ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাশ করলেও ৩২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এবারের ফলাফলে উপজেলায় মাদ্রাসা পর্যায়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২জন। শেরপুর উপজেলায় মোট ৩৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কাহালু (বগুড়া) : এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উপজেলার ৪টি কলেজ ও ৫টি মাদ্রাসা থেকে মোট ২৭ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়া উপজেলার আল্লামের তাকিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে কোন পরীক্ষার্থী পাশ করতে পারেনি। ওই প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল সাতজন। অপরদিকে সমমানের আলিম পরীক্ষায় উপজেলার ৫টি মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন। এছাড়া উপজেলায় পাশের হারের দিক থেকে প্রথমে রয়েছে কাহালু আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ। উপজেলার মাদ্রাসার মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়াসহ শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে উপজেলার শিলকওঁর মিছবাহুল উলুম আলিম মাদ্রাসা থেকে।
মন্তব্য করুন