ট্রেন ছাড়তে দেরি
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ট্রেনযাত্রীদের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, ট্রেন ছাড়তে দেরি

পাবনা ও ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর ওয়ে স্টেশনে আন্ত:নগর একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় ক্ষিপ্ত যাত্রীরা প্রথমে স্টেশন মাস্টারকে মারধরের চেষ্টা করে। সেখানে কিছু ভাঙচুর চালায়। পরে স্থানীয়দের ওপর চড়াও হয়ে মসজিদ পর্যন্ত আক্রমণ করে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শরৎনগর স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় দুই যুবক আহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ট্রেনের কয়েকজন যাত্রী।
ট্রেন যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সকালে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে মেরামত কাজ চলা অবস্থায় গত সোমবার রাতে শরৎনগর স্টেশনে একতা এক্সপ্রেস থামানো হয়। কিন্তু ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় যাত্রীরা হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
প্রথমে তারা স্টেশন মাস্টারকে মারধরের চেষ্টা চালায়। পরে আরও যাত্রী নেমে তাণ্ডব চালালে এলাকাবাসী বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত যাত্রীরা স্থানীয়দের ওপর হামলা চালায়। নজরুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা মসজিদে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালায় তারা। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে গ্রামবাসীকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। মুহূর্তেই শত শত মানুষ একজোট হয়ে যাত্রীদের প্রতিহত করলে তারা পিছু হটে পালিয়ে যায়। এরপর ট্রেনে উঠেও কয়েকজন যাত্রীকে মারধর করে স্থানীয় কিছু যুবক।
এ ঘটনায় কামরুল হাসান রিফাত ও আকাশ নামে স্থানীয় দুই যুবক আহত হন। ট্রেনযাত্রী কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ট্রেনটিকে স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেয়। এ বিষয়ে শরৎনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. তাওহিদ হোসেন বলেন, ভাঙ্গুড়া স্টেশনের কাছে ট্রেন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেরামত কাজ চলছিল।
আরও পড়ুনযেকারণে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গত সোমবার রাত ৮টা ৩২ মিনিটে শরৎনগর স্টেশনে আসার পর দাঁড় করানো হয়। ট্রেন ছাড়তে দেরী হওয়ায় রাত পৌনে ১০টার দিকে কয়েকজন যাত্রী এসে আমার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
এসময় যাত্রীদের মধ্যেই দুই গ্রুপ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে বেশি ক্ষুব্ধ গ্রুপটি আমার কক্ষের একটি চেয়ার ভাঙচুর করে। এলাকাবাসী এগিয়ে আসার পর তারা চলে যায়। তখন ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ ট্রেনের জানালা ভাঙচুর করে। পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। রাত ১০টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে যায় বলে জানান তিনি।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে জানতে পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে ট্রেনটিকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যাত্রী ও এলাকাবাসীর মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি।
মন্তব্য করুন