আট গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
কুড়িগ্রামের নীলকুমর নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী ও চন্দ্রখানা গ্রামের মাঝখানে বয়ে যাওয়া নীলকুমর নদীর ওপর একটি সেতু বাস্তবায়নের দীর্ঘদিনের দাবি। সেখানে বাস্তবায়ন হয়নি দু’গ্রামের হাজারোও মানুষের প্রাণের সে দাবি। ভোট আসলে তাদের কদর বাড়লেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনা জনপ্রতিনিধিরা।
ফলে দুভোর্গ রয়ে গেছে সেখানকার বসবাসকারীদের। তা ছাড়াও আবাসনের ৮০ টি পরিবারসহ আট গ্রামের ১০ হাজারের বেশি মানুষের ভরসা এখন বাঁশের সাঁকোটি। জীবন ঝুঁকি নিয়ে পারাপারের সময় আহত হন নারী, শিশু। জানা যায়, উপজেলা শহরের অদূরে বালাটারী ও চন্দ্রখানা গ্রামের মাঝখানে বয়ে গেছে নীলকুমর নদী। সেখানে নির্মাণ করা হয়নি একটি সেতু।
ফলে বিভাজন হয়ে পড়েছে আট গ্রামের বসবাসকারীরা। দুভোর্গের হাত থেকে রক্ষার জন চাঁদা তুলে বাঁশের সাকো তৈরি করেন স্থানীয়রা। কোন রকমের আসা যাওয়ার ব্যবস্থা করেন তারা। তৈরির কিছুদিন যেতে না যেতই প্রায় অকেজো হয়েছে পড়ে নড়েবড়ে বাশেঁর সাঁকো। গত তিন বছর ধরে জীবন হাতে নিয়ে এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন পার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও সেখানে নির্মাণ করা হয়নি সেই সেতু।
পারাপারের সময় ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছেন অনেকেই। এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণও হারিয়েছেন। ভারী মালপত্র আনা-নেওয়ার জন্য নৌকার ওপর নির্ভর করতে হয় দু’পারের মানুষের। শিক্ষার্থীদের বিপদে পড়তে হয় প্রতিনিয়িত।
আরও পড়ুনওই এলাকার ৬০ বছর বয়সী কৃষক এহসান আলীর ছেলে আতিকুর রহমান (৩৬) এক বছর আগে সাঁকো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। প্রায় এক মাস চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় তার। এহসান আলী জানান ‘আমি নিজেও দুইবার এই সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছি। প্রতিবার শুধু প্রতিশ্রুতি পাই, সেতু আর পাই না। কবে নীলকুমর নদীর ওপর একটি সেতু হবে, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।’
ওই এলাকার কৃষক হযরত আলী (৫০) ও আলতাফ আলী জানান, ‘তিন বছর ধরে আমরা নিজেরাই বাঁশ দিয়ে এই সাঁকো বানাই। প্রতিবছর আমি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি বাঁশ দিই, অন্যন্যারা শ্রম দেয়। এই ভাবেই যাওয়া আসা করছি।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান, ‘আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। নীলকুমর নদীর ওপর ১২০ মিটার সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। বরাদ্দ আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্তব্য করুন