ভিডিও সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে কি প্রভাব পড়বে ?

হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে কি প্রভাব পড়বে ?, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহণ পথ বা ‘চেক পয়েন্ট’ হিসেবে পরিচিত হরমুজ প্রণালি। কৌশলগতভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা অনেকটাই এই পথে তেল পরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। প্রণালিটি ওমান ও ইরানের মাঝখানে অবস্থিত এবং এটি ওমান উপসাগর ও আরব সাগরকে সংযুক্ত করে। এই প্রণালির সবচেয়ে সরু স্থান মাত্র ৩৩ কিলোমিটার চওড়া, যার মধ্যে শিপিং লেন বা জাহাজ চলাচলের পথ মাত্র ৩ কিলোমিটার প্রশস্ত।

বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এই প্রণালি দিয়ে যায়। বিশ্লেষণ সংস্থা ভরটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের শুরু থেকে গত মাস পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ৭৮ লাখ থেকে ২ কোটি ৮ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ও অন্যান্য জ্বালানি এই প্রণালি দিয়ে পরিবাহিত হয়েছে। সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও ইরাকসহ ওপেকভুক্ত অধিকাংশ দেশ তাদের অপরিশোধিত তেল এ পথেই রপ্তানি করে, বিশেষ করে এশীয় দেশগুলোতে।এই অঞ্চলজুড়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল রক্ষা করার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহরের, যার ঘাঁটি বাহরাইনে অবস্থিত।

হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে কী হবে

প্রণালিটি বন্ধ করে দেওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সরাসরি চাপ দেওয়ার একটি উপায় হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এর ফলে তেলের দাম বাড়বে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাপী দ্রুত মুদ্রাস্ফীতির কারণ হবে।তবে এটি ইরানের জন্যও একটি চরম আত্মঘাতী অর্থনৈতিক পদক্ষেপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ ইরান নিজেও এই পথ ব্যবহার করেই তেল রপ্তানি করে। তাছাড়া হরমুজ বন্ধ করে দিলে উপসাগরীয় আরব দেশগুলো যারা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের হামলার সমালোচক, তারাও নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

এই পদক্ষেপ বিশেষ করে চীনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারণ ইরানের মোট তেল রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশই কিনে থাকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটি।

যা বলছে ইরান

আরও পড়ুন

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি জানিয়েছে, ইরানের পার্লামেন্টে হরমুজ প্রণালি বন্ধের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইরানের শীর্ষ নেতাদের ওপরই নির্ভর করছে।

রোববার (২২ জুন) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘ট্রাম্পের ইরানে বোমা হামলার সিদ্ধান্ত চিরস্থায়ী পরিণতি বয়ে আনবে।’ তার এই বক্তব্য থেকে প্রতিশোধের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়।এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়ার পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইসরায়েল একটি মারাত্মক ভুল করেছে এবং তাদের শাস্তি পেতে হবে। তবে হরমুজ প্রণালি নিয়ে তিনি এখনও সরাসরি কিছু বলেননি।

দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলে দুদিনের মাথায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই আক্রমণের প্রতিশোধের অন্যতম কৌশল হিসাবে ইরান যদি সত্যিই ‘হরমুজ প্রণালি’ বন্ধ করে দেয় তাহলে বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বে তেলের বাজারে দেখা দিবে অস্থিরতা । অন্যরা সামাল দিতে পারলেও বাংলাদেশ  টিকে থাকা হয়ে পড়বে কষ্টসাধ্য ।  

 

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিলয়-সাফার নাটক ‘জান আমার’-এ মুগ্ধ দর্শক

ঢাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে যুবকের মৃত্যু

ত্রিশালে ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু

বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১২ রোহিঙ্গাসহ ১৬ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

র‌্যাবের অভিযানে পলাতক দুই আসামি গ্রেফতার

হাতিয়ায় যাত্রীবাহী স্পিডবোটডুবি