এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, থানা, পুলিশ, প্রশাসন দখলের পুরোনো খারাপ প্র্যাকটিস পাল্টাতে হবে। এ ধরনের প্রচেষ্টা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার লক্ষণ। চট্টগ্রামে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা। মঞ্জু বলেন, আমরা এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শাহজাহান চৌধুরীর এ বক্তব্যের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য দরকার।
রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ফেনী-২ (সদর) আসনে নির্বাচনী প্রচারণা উদ্বোধন উপলক্ষে ফেনীর একটি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিয়ে বড় একটি জোট হচ্ছে। তাতে এনসিপিসহ অন্যরাও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্দরের বিষয়ে তিনি বলেন, বন্দরের পার্টনারশিপ বিদেশিদের দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে দিতে পারে, আমাদের আপত্তি নেই। তবে বিষয়গুলো স্পষ্ট হতে হবে। জাতির কাছে পরিষ্কার থাকতে হবে। বিএনপির সঙ্গে এবি পার্টি জোটে যাচ্ছে না বলেও স্পষ্ট করেন।
ফেনী জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক মাস্টার আহসানুল্লাহর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম বাদল।
উপস্থিত ছিলেন দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল্যা নোমান,জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন বাহার, সদস্য সচিব অধ্যাপক ফজলুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম কামরুল, মামুন আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহীন সুলতানী, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাবীব মিয়াজী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা মনি, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহ দপ্তর সম্পাদ নাজরানা হাফিজ, নারী নেত্রী শাহানা শানু,হুরে জান্নাত, ফেনী পৌর আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ সেলিম,সদস্য সচিব রেজওয়ানুল খাইর, নাফিজ ইমতিয়াজ শিমুল, ফেনী সদর উপজেলার আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব সাইদ খান, যুগ্মসদস্য সচিব নজরুল ইসলাম সবুজ, সদস্য সাইদুল হক মিলন, যুব পার্টি আহ্বায়ক শফিউল্যাহ পারভেজ ও সদস্য ইব্রাহিম সোহাগ।
মজিবুর রহমান মঞ্জু সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমপি নির্বাচিত হলে নিজের ঘাটলা বা বাড়িতে সালিশ দরবার করবেন না, প্রশাসনকে কাজের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ এবং বাজার বা স্কুল কমিটির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন না।
পাশাপাশি ডিসিসহ সব সরকারি দপ্তরে সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তা বাছাইয়ের চেষ্টা, সরকারি দপ্তরে কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সরকারি বরাদ্দের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
ফেনীতে মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেনা ব্রিগেড স্থাপনে উপযুক্ত জায়গা দেখিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য যা করা দরকার তা করবেন।
মঞ্জু জানান, জাতীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান এবং পরিচিতি কাজে লাগিয়ে ফেনীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করানো, বেশ কিছু রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন এবং শিক্ষা ও ক্রীড়া সামগ্রী বরাদ্দসহ বেশ কিছু কাজ তিনি করিয়েছেন।
তিনি বলেন, পুরোনো রাজনীতি আর পুরোনো তর্ক বাদ দিয়ে ফেনীসহ সারাদেশের সমস্যা সমাধানে জোর দিতে হবে। খারাপ লোককে নির্বাচিত করলে পরিণতি আরো খারাপ হবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবর্তন এখনি শুরু করতে হবে, এবং ইতিবাচক রাজনীতি শুরু করার প্রত্যয় জানিয়ে তাকে সমর্থন দিতে ফেনীবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অভ্যুত্থানের পর সবাই মুক্তভাবে রাজনীতি করছে, এটা একটা বড় অর্জন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী পদে দুইবারের বেশি কেউ থাকতে পারবে না এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী দলের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক এসব সংস্কার বাস্তবায়িত হলে আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক পরিবর্তিত হবে।
তিনি বলেন, এখন যে কেউ সরকার প্রধানের কড়া সমালোচনা করতে পারছেন, এটি কিছুদিন আগেও সম্ভব ছিল না। তিনি বলেন, সুযোগ থাকার পরও বিএনপির সঙ্গে জোটে যাইনি কারণ বিএনপির অনেক নেতা এত বছর সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। তাদের দলের নমিনেশন পাওয়ার অধিকার আছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে দল হিসেবে যারা সামনে থেকে ভূমিকা রেখেছে তাদের নিয়ে নতুন জোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ২৫ নভেম্বর নতুন জোটের ঘোষণা আসতে পারে। এছাড়া জাতীয় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরে স্বাধীন ভোটারদের সমর্থন কামনা করেন তিনি। এমপি নির্বাচিত না হলেও ফেনীবাসীর জন্য আজীবন কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।