কাতারে আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা কাতারে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালায় অন্তত ১০ জন নিহত হয় এবং সীমান্তে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ হওয়ার পর শনিবার (১৮ ক্টোবর) দেশ দুইটির মধ্যে এই আলোচনা হতে যাচ্ছে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্য ছিল আফগান সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় এক জঙ্গি গোষ্ঠী, যা পাকিস্তানি তালেবানের (টিটিপি) সহযোগী হিসেবে পরিচিত। এর আগে পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে জঙ্গি হামলায় কয়েকজন আধাসামরিক সদস্য নিহত হন।
আফগান সরকার শুক্রবার রাতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। এর আগে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা সংঘর্ষে উভয় দেশের সেনা ও বেসামরিক নাগরিকসহ ডজনখানেক প্রাণহানি ঘটে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বৈঠকে আফগান মাটি থেকে পাকিস্তানে পরিচালিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ ও সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ও গোয়েন্দা প্রধান জেনারেল আসিম মালিক দোহায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।
আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল কাতারে পৌঁছেছে বলে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে।
এক জ্যেষ্ঠ তালেবান কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি ভেঙে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের তিনটি স্থানে বোমা হামলা চালিয়েছে। আফগানিস্তান প্রতিশোধ নেবে।
তবে তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ শনিবার বলেন, আমরা এই লঙ্ঘনের জবাব দেওয়ার অধিকার রাখি, তবে আলোচনার মর্যাদা ও স্থিতি বজায় রাখতে আপাতত নতুন কোনো সামরিক অভিযান চালানো থেকে বাহিনীকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এক প্রাদেশিক হাসপাতালের কর্মকর্তা জানান, সর্বশেষ হামলায় দুই শিশুসহ ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুনআফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে স্থানীয় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া তিন ক্রিকেটারও ছিলেন। বোর্ডটি আগামী মাসের পাকিস্তানসহ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, তাদের বাহিনী নির্ভুল বিমান হামলা চালিয়েছে, লক্ষ্য ছিল হাফিজ গুল বাহাদুর গ্রুপ, যা টিটিপি-সংশ্লিষ্ট বলে পাকিস্তানের দাবি।
দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের মূল কারণ নিরাপত্তা ইস্যু। পাকিস্তান অভিযোগ করছে, আফগানিস্তান টিটিপি-র নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে — তবে কাবুল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির বলেন, আফগান মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা চালানো উদ্বেগজনক।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, কাবুল এখন ভারতের প্রতিনিধি হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
জবাবে আফগান উপ-গৃহমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ নবি ওমারি বলেন, আমরাই টিটিপি-কে এখানে আনিনি, তাদের সমর্থনও দিইনি, আর তারা আমাদের সময়েও আসেনি।
সূত্র: এএফপি
মন্তব্য করুন