ভিডিও রবিবার, ১১ মে ২০২৫

নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রা

নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রা, প্রতীকী ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপও (রূপরেখা) পাওয়া যাবে। নির্বাচনের ট্রেনযাত্রা শুরু করেছে, এটা আর থামবে না। তবে সংস্কারের জন্য নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিতও করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথাগুলো বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে তিনি এই ভাষণ দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, এটা আর থামবে না। কিন্তু যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলো কাজ সেরে ফেলতে হবে। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছবে, সেটা নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা এর জন্য রেললাইনগুলো বসিয়ে দিতে পারি, আর তা হবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে।

ভাষণের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধের লাখো লাখো শহীদি এবং গত জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র, শ্রমিক, জনতার অভ্যুত্থানে নিহত সব শহীদকে সশস্ত্র সালাম ও গভীর শ্রদ্ধা জানান প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে স্মরণ করেন ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যারা আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন, যারা ৯ দফা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, যারা এক দফা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন এবং যারা দেশকে এক হিংস্র স্বৈরাচারের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন তাদের।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম একশ’ দিন অতিক্রম করার কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, তাদের এক কঠিন পরিস্থিতিতে দায়িত্বগ্রহণ করতে হয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট সরকার প্রধান পালিয়ে গেলে দেশ সরকার শূন্য হয় সাময়িকভাবে। পুলিশ প্রশাসনও এ সময় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লে উদ্বেগজনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

স্বৈরশাসনে বিপর্যস্ত এ দেশকে সবাই মিলে পুনর্বাসন করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই। জুলাই-আগস্ট হত্যাকান্ডের বিচারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, এর কাজও বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব।

প্রধান উপদেষ্টার দীর্ঘ ভাষণের অতি সামান্য দুই একটি অংশই কেবল আমরা তুলে ধরলাম। এই একশ’ দিনে দেশকে দ্রুত স্বাভাবিক স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আনার জন্য প্রধান উপদেষ্টাসহ তার অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
কেউ কেউ বলছেন, আইন শৃঙ্খলার উন্নয়ন ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সবার আগে।

আরও পড়ুন

আবার অনেকেই বলছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আর্থিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এই সংস্কারগুলো করার পরই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তবে এটা সবার মনে রাখতে হবে বৈপ্লবিক পরিবির্তনের লক্ষ্য নিয়ে তরুণরা আন্দোলন করেছে, রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে এবং তাদের আকাক্সক্ষা দেশবাসীকে প্রভাবিত করেছে।

এখন গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে অর্থবহ সংস্কার জরুরি বলে আমরা মনে করি। যার মাধ্যমে ভঙ্গুর হয়ে পড়া রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে পুনরুদ্ধার করা যাবে। বাংলাদেশের তরুণদের দেয়ালের লিখন পড়ে যে কেউ বুঝবেন তারা কী স্বপ্ন দেখছে। তরুণদের স্বপ্ন পূরণ করাই এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ হওয়া উচিত এবং সেটা হতে হবে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে।

দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থাশীল। তবে তাদের শঙ্কা, নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে দেরি হলে পতিত স্বৈরাচারের অপপ্রচারের সুযোগ পাবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষিত হলে তা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বিরোধী অপশক্তির অপপ্রচারের সমুচিত জবাব বলে বিবেচিত হবে। দ্রুত সংস্কার কাজগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ সরকারের পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন জোরদারে অবদান রাখবে।

অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার কাজ শুরু করেছে, তা সবই বাস্তবসম্মত। দেশ সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দিতে হবে। এই সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা দরকার।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় দস্যুতা ও প্রতারণা মামলার আসামিসহ গ্রেফতার চার

বগুড়ার গাবতলীর পদ্মপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন দেশ সেরা

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ছাত্রলীগ সমর্থক সজিবের বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা, জুলাই গেজেটে নাম প্রকাশ

নিষিদ্ধ হলো আওয়ামী লীগের কার্যক্রম

বগুড়ার শেরপুরে কৃষকের ভুট্টা লুটের অভিযোগ

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি সূর্য দহনে পুড়ছে রাজশাহী