আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বাধীনতার ২০০ বছরে প্রথমবার নারী প্রেসিডেন্ট পেতে চলেছে মেক্সিকো। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) শপথ গ্রহণের মাধ্যমে এই দায়িত্ব নিয়েছেন ক্লডিয়া শেইনবম। গত জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৬০ শতাংশ ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন শেইনবম। জলবায়ুবিজ্ঞানী থেকে রাজনীতিতে আসা শেইনবম মেক্সিকো সিটির মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
পূর্বসূরির মতো বিস্তৃত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও দরিদ্রদের হয়ে লড়াই করার অঙ্গীকার করলেও, নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্লডিয়ার সামনে রয়েছে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ। ৬২ বছর বয়সী নতুন প্রেসিডেন্টের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে দেশ জুড়ে বিরাজমান নৃশংসতা বৃদ্ধি, মন্থরগতির অর্থনীতি ও ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বস্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের আকাপুল্কোর পুনর্গঠন।
এ ছাড়া মাদক কারবারিদের আধিপত্য থাকা উত্তরাঞ্চলীয় কালিকান শহরের আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতিও সামলাতে হবে তাকে। দেশের উত্তরে তিজুয়ানা থেকে দক্ষিণে চিয়াপাস পর্যন্ত তাদের দৌরাত্ম্য সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে।
শপথ নেওয়ার পর শেইনবম বলেন, ‘এখন রূপান্তরের সময়, এখন নারীদের সময়।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি একজন মা, একজন দাদী, একজন বিজ্ঞানী এবং একজন বিশ্বাসী নারী এবং আজ থেকে মেক্সিকান জনগণের ইচ্ছায় একজন প্রেসিডেন্ট।’
শেইনবম পুনর্ব্যক্ত করেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বায়ত্তশাসিত হবে এবং বিনিয়োগকারীদের তিনি আশ্বস্ত থাকতে বলেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে জাতীয় এবং বিদেশি শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগ নিরাপদ হবে।
রয়্যাল হলোওয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের জেন্ডার অ্যান্ড পলিটিক্সের অধ্যাপক, জেনিফার পিসকোপো, ল্যাটিন আমেরিকা নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। পিসকোপো বলেছেন, প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে নতুন এক বার্তা দিলো মেক্সিকোর মানুষ। তারা এটা দেখালো, নারীরাও যোগ্যতায় পিছিয়ে নেই। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে আবার অবাস্তব আকাঙ্ক্ষার চাপ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
তিনি বলেছেন, ‘নারী নেতৃত্ব একটি শক্তিশালী প্রতীক।
কিন্তু তাদের তো কোনও জাদুকরী ক্ষমতা নেই। সরকারের সামনে যদি থাকে দৈত্যাকার চ্যালেঞ্জ, তবে রূপকথার মতো রাতারাতি সমাধানের আকাঙ্ক্ষা বরং গভীর হতাশাই (নারী নেতৃত্বে) সৃষ্টি করতে পারে।’
মেক্সিকোর সেন্টার ফর ইকোনমিক রিসার্চ অ্যান্ড টিচিংয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক কার্লোস পেরেজ রিকার্ট বলেছেন, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওবরাদোর ছিলেন প্রচণ্ড ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব। এর জেরেই বেশ কিছু রাজনৈতিক ভুল পদক্ষেপ চাপা পড়ে যেত। তবে ক্লডিয়া শেইনবমের সে সুযোগ নেই। তাই যেখানে ওবরাদো যেসব চ্যালেঞ্জ ক্যারিশমা দিয়ে উতরে গেছেন, শেইনবমকে সেই বাধা টপকাতে হতে হবে কার্যোদ্ধারে সক্ষম।
সূত্র : রয়টার্স
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।