ভিডিও বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নাগরিক সমাজের আপত্তি

রাজশাহী সার্কিট হাউসের আরও ভবন নির্মাণ করতে ৫২টি গাছ কাটা হচ্ছে

রাজশাহী সার্কিট হাউসের আরও ভবন নির্মাণ করতে ৫২টি গাছ কাটা হচ্ছে। ছবি : দৈনিক করতোয়া

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী সার্কিট হাউসে আরও তিনটি ভবন নির্মাণ করা হবে। এজন্য কাটা পড়ছে ৫২টি গাছ। গাছগুলোর মধ্যে কয়েকটি শতবর্ষী। ইতোমধ্যে নিলামে মাত্র ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় এসব গাছ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি জানাজানি হলে আপত্তি জানাচ্ছে নাগরিক সমাজ ও পরিবেশবাদী সংগঠন। তারা বলছেন, গাছ হত্যা করে তারা উন্নয়ন চান না। তবে গণপূর্ত বিভাগ বলছে, গাছের জন্য উন্নয়ন থেমে থাকবে না। এখন গাছ কাটা বন্ধ করলে পুরো প্রকল্পের ডিজাইনই পরিবর্তন করতে হবে। তবে বিভাগীয় কমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, নাগরিক সমাজের মতামতের ভিত্তিতেই সব হবে।

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, সার্কিট হাউসে এখন যে ৩ তলা ভবন আছে সেটি থাকবে। এর পাশাপাশি একটি ৬তলা ভবন, একটি ৪ তলা ব্যারাক ও একটি একতলা কিচেন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৯ কোটি টাকা। প্রথমেই ৬তলা ভবনটি নির্মাণ করতে ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আর এ জন্যই গাছ কাটার পরিকল্পনা। গতকাল বুধবার বোয়ালিয়া ভূমি অফিস থেকে নিলামে ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় ৫২টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে। যে কোনো সময় গাছ কাটার কাজ শুরু হবে।

রাজশাহী সার্কিট হাউস প্রাঙ্গন আগে থেকেই সবুজে ঘেরা। নানারকম গাছ সেখানকার সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গাছগুলো নিলাম দেওয়ার আগেই নাম্বারিং করা হয়েছে। গাছগুলোর মধ্যে অন্তত চারটি শতবর্ষী। এসব গাছ কেটে উন্নয়ন পরিকল্পনার বিষয়টি জানতে পেরে আপত্তি জানাচ্ছে পরিবেশবাদী সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

সম্প্রতি জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ জামাল কাদেরী ও পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম রাজু, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ ও রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ আলমের সাথে দেখা করেন। তারা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন।

আরও পড়ুন

নাজমুল ইসলাম রাজু জানান, গণপূর্ত বিভাগ তাদের বলেছে যেসব পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়ে গেছে। এখন গাছ রক্ষা করতে গেলে ডিজাইন পরিবর্তন করতে হবে। তারা গাছ রেখেই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানিয়ে এসেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ জামাল কাদেরী বলেন, ‘গণপূর্ত আমাদের বলেছে যে তারা গাছ কাটলেও পরে রোপণ করবে। কিন্তু এতে তো পুরনো গাছগুলো পাওয়া যাবে না। গাছ বড় হতে অনেক সময় লাগবে। তবে বিভাগীয় কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, নাগরিক সমাজের মতামত নিয়েই সব করা হবে। তিনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে চেয়েছেন।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদকে ফোন দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে গণপূর্তের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আপত্তি এসেছে। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টা দেখবে।

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম বলেন, গাছের জন্য তো সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প থেমে থাকবে না। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবাইকে নিয়ে বসে যদি সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে হবে। তবে এই প্রকল্পে আমাদের গাছ রোপণের জন্য টাকা ধরা আছে। ভবন নির্মাণের পর যত ফাঁকা জায়গা পাওয়া যাবে, সেখানে গাছ লাগিয়ে দেব।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজশাহী সার্কিট হাউসের আরও ভবন নির্মাণ করতে ৫২টি গাছ কাটা হচ্ছে

লালমনিরহাটের সীমান্তে ঘাস কাটতে যাওয়া যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

সিরাজগঞ্জে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

৪ দফা দাবিতে বগুড়া পলিটেকনিক‘র শিক্ষার্থীদের বেতগাড়িতে ব্লকেড

উত্তরা ইপিজেডের শ্রমিক গ্রেফতার নিয়ে উত্তেজনা, ডিসি-এসপি অফিস ঘেরাও

চাঁপাইনবাবগঞ্জে র‌্যাবের হাতে পলাতক ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি গ্রেফতার