রাজশাহীতে টমেটোর বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
মাইানুল হাসান জনি, রাজশাহী: গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে রাজশাহী ও পার্শ¦বর্তী অঞ্চলে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন ও দাম বেশি থাকায় বাড়তি লাভের আশা করছেন চাষিরা। জেলায় অন্যান্য উপজেলার চেয়ে গোদাগাড়ীতে টমেটোর চাষ হয়ে থাকে। রাজশাহীর চাহিদা মিটিয়ে দেশের টমেটো অঙ্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত এই উপজেলা। দেশের বেশিরভাগই টমেটো উৎপাদন হয় এই উপজেলায়। এজন্য ‘টমেটো অঙ্গরাজ্য’ বলা হয় গোদাগাড়ীকে।
এ উপজেলার কৃষকরা জানান, বছরভেদে টমেটোর দাম বেশি-কম হওয়ায় অনেকেই টমেটো চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তবে বর্তমানে পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের কৃষকরা দিন দিন টমেটো চাষের দিকে ঝুকছে। প্রতি বছর চরাঞ্চলে বাড়ছে টমেটোর চাষ। চরাঞ্চলের জমি পলিমাটি হওয়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলের চাইতে টমেটোর সাইজ বড় হচ্ছে এবং দাম বেশি পাচ্ছে এ অঞ্চলের টমেটো চাষিরা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহীতে এবছর ৩ হাজার ১৪৬ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। তার ভিতরে শুধুমাত্র গোদাগাড়ী উপজেলাতেই চাষ হয়েছে ২ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমি। এই উপজেলায় চলতি বছরে আয় হবে ১১২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। কেনা বেচায় অস্থায়ীভাবে ৮ থেকে ৯ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গোদাগাড়ীতে টমেটোর আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। ৬ বছর পরে একই ধারাবাহিকতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে টমেটোর আবাদ চলতি বছরে হয়েছে ২ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৪ হাজার ৭৬০ টন। এবছর গড়ে প্রতি কেজি টমেটো ১৫ টাকা দরে বিক্রি ধরা হলে আয় হবে ১১২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এসব টমেটো চাষের সাথে সরাসরি জড়িত ৮ হাজার কৃষক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি থেকেই বিক্রি হয় এসব টমেটো। উৎপাদন ও বিক্রি ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় টমেটো চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। ফলে টমেটোতে আগ্রহ বাড়ছে। সাধারণত আউশ ধান কেটে নেওয়ার পরে টমেটোর চাষ শুরু হয়। গোদাগাড়ী উপজেলায় ১৭-২০ জাতের টমেটোর চাষ হয়।
আরও পড়ুনযার মধ্যে বেশিরভাগই হাইব্রিড। তবে অন্য যেকোনো মাঠ ফসলের চেয়ে টমেটো চাষ অত্যন্ত লাভজনক। তবে ভালো ফলন, বীজ ও দাম নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয়ে কোনো বছর চাষের হার বেড়েছে আবার কোনো বছর কমেছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এইবছর রাজশাহীতে ৩ হাজার ১৪৬ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। বর্তমানে যে আবহাওয়া আছে তা টমেটো চাষে অনুকূল। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষিদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি।
বিভিন্ন কোম্পানি যাতে ভালো বীজ কৃষকদের সরবরাহ করে এই বিষয়ে আমাদের কঠোর মনিটরিং ছিল। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ অব্যহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন







