ভিডিও বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২

প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:১২ রাত

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রাজশাহীতে ১০.২

হাড় কাঁপানো শীতে স্থবির উত্তর জনপদ : বাড়ছে জনভোগান্তি

হাড় কাঁপানো শীতে স্থবির উত্তর জনপদ : বাড়ছে জনভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার : পৌষের হাড় কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে দেশের উত্তরাঞ্চল। জেঁকে বসা তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ১০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আর বগুড়ায় পারদ নেমেছে ১১.৫ ডিগ্রিতে। হিমালয় ছুঁয়ে আসা উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় এ অঞ্চলে এখন হাড় কাঁপানো পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য এক দুঃসহ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও কুয়াশার ঘনঘটা ভেদ করে সূর্যের দেখা মিলছে না অনেক জায়গায়। এর ফলে মহাসড়কগুলোতে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করছে দূরপাল্লার যানবাহন। তীব্র ঠান্ডার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও রিকশাচালকরা। ভোরে কাজে বের হতে না পারায় থমকে গেছে তাদের উপার্জনের চাকা।

শহরের মোড়ে মোড়ে ও বস্তি এলাকায় ছিন্নমূল মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। হাঁড় কাঁপানো এই ঠান্ডার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতকালীন রোগের প্রকোপ। এসব অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধদের ভিড় বেড়েছে।

চিকিৎসকরা এই সময়ে শিশুদের বাড়তি যত্ন এবং জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যদিকে টানা কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের। বোরো বীজতলা ও রবি শস্য রক্ষায় তারা বিভিন্ন ধরণের চেষ্টা করছেন।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে এবং সামনের দিনগুলোতে একটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বগুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ  বয়ে যাচ্ছে না। তবে কোন এলাকায় ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে এবং দুইদিন স্থায়ী হলে তাকে শৈত্য প্রবাহ বলা হয়ে থাকে।

শীত নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-
রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, এখন পর্যন্ত এটি বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

এতে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। ঘন কুয়াশায় লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহনগুলো। ইতোমধ্যে ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম কাপড় কেনাবেচা বেড়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে দিনের বেলাতেও হিম বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র ঠান্ডায় কাজকর্মে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ।

আরও পড়ুন

ফলে কাজের ফাঁকে শুকনো খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শ্রমিকরাসহ সাধারণ মানুষ। এদিকে তীব্র শীতে বোরো আবাদ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। জেলায় সকাল ৬ টায় ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এবং বাতাসের আদ্রতা ১০০। আগামী দুই থেকে তিনদিন এমন তাপমাত্রা অব্যহত থাকবে। তবে মাসের শেষে একটি শৈত্য প্রবাহের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : উত্তরের হিমেল হাওয়ার কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে জেঁকে বসেছে শীত। গত তিন দিনে সূর্যের দেখা মেলেনি ভূরুঙ্গামারীর আকাশে। যতই দিন যাচ্ছে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে। এতে শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষের জীবনে।

বিশেষ করে কনকনে শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস।

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : নাগেশ্বরীতে ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জেকে বসেছে হাড় কাঁপানো শীত। বেড়েছে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধরা। বোরো চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে কৃষক। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : কনকনে উত্তরা হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশার সঙ্গে   সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সুর্যের দেখা মিলছে না গত কয়েকদিন। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা আর কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারপাশ।

রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : রায়গঞ্জে গত এক সপ্তাহজুড়ে প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনসাধারণের চলাচলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রতিবছরের মত এবছরেও পৌষমাসের শুরু থেকে প্রচন্ড শীত শুরু হয়। আর শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় শ্রমজীবী মানুষের। সন্ধ্যার পর সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশায় কিছু চোখে পড়ে না।

এতে অনেক সময় দিনের বেলায়ও হেট লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চালাতে হচ্ছে। রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা ডাক্তার ফারিয়া তাসমিম বলেন শীত জনিত রোগীর সংখা বাড়ছে। তবে সবার জন্য পরামর্শ হলো পঁচা বাশি ও তৈলাক্ত ভাজিপুরি খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। আর বয়বৃদ্ধা ও শিশুদের প্রয়োজন ছাড়া  বাইরে চলাফেরার প্রয়োজন নেই। কোন সমস্যা হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হাড় কাঁপানো শীতে স্থবির উত্তর জনপদ : বাড়ছে জনভোগান্তি

শুক্রবার ৩০০ ফিটের সব বর্জ্য অপসারণ করবে বিএনপি

নাটোরে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে সাবেক স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী আটক

বগুড়ার শাজাহানপুরে বার্মিজ চাকুসহ যুবলীগের ২ নেতা গ্রেফতার

৩০ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদককারবারি গ্রেফতার

বগুড়ার সোনাতলায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত ১