ভিডিও বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৭:১৯ বিকাল

জাতীয় সমঝোতা: তারেক রহমানের নতুন রাজনীতির রূপরেখা

ড. নার্গিস আখতার বানু : শেখ হাসিনার ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম করে গেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১টি মামলা হয়েছিল (প্রথম আলো ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩)। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবর নাগাদ এই মামলা দেড় লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ছিল ৬০ লাখের বেশি। গুম-খুনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছিলেন এই দলের নেতা-কর্মীরা। সুতরাং এই দলটিই জুলাই বিপ্লবের মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে দেখিয়েছে নতুন স্বপ্ন। হয়ে উঠেছে দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক। আর সেই দলটিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক অভাবনীয় পরিবর্তনের সূচনা করেছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত নাম তারেক রহমান। বিগত কয়েক বছরে তাঁর রাজনৈতিক দর্শনে এক গুণগত পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। তিনি এখন কেবল ক্ষমতা পরিবর্তনের কথা বলছেন না। বরং ‘জাতীয় সমঝোতা’ এবং রাষ্ট্র কাঠামোর আমূল পরিবর্তনের কথা বলছেন। তিনি এজন্য জাতির সামনে একটি রূপরেখা পেশ করেছেন। 
৩১ দফা কর্মসূচিতেই জাতীয় সমঝোতার কথা বলা হয়েছে। প্রথমেই বলা হয়েছে, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। 

অনেকে বলতে পারেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘সমঝোতা’শব্দটি দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ ও বিতর্কের জন্ম দিয়ে আসছে। ইতিহাসের নানা পর্যায়ে এই শব্দটি কখনো আপস, কখনো ক্ষমতা ভাগাভাগির গোপন সমীকরণ, আবার কখনো সংকট মোকাবিলার পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমান যে ‘জাতীয় সমঝোতার’ কথা বলছেন, তা এই প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে একটি ভিন্ন রাজনৈতিক ভাষা ও কাঠামোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তারেক রহমানের বক্তব্যে সমঝোতা কোনো তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নয়; বরং এটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনের একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এই ধারণার বাস্তব রূপ হিসেবেই বিএনপি ২০২৩ সালে ‘রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা’ঘোষণা করে। দলটি এই ৩১ দফাকে ন্যূনতম জাতীয় কর্মসূচি হিসেবে তুলে ধরছে।

প্রতিহিংসা নয়, সমঝোতার রাজনীতি: তারেক রহমানের বর্তমান রাজনীতির প্রধান স্তম্ভ হলো ‘জাতীয় সমঝোতা’। তিনি বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চরম বৈরিতা দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর ধরে আমাদের ওপর যে জুলুম হয়েছে, আমরা তার প্রতিশোধ নেব না। আমরা ন্যায়ের শাসন কায়েম করব। ক্ষমতার পরিবর্তন মানে কেবল এক দল থেকে অন্য দলে যাওয়া নয়, ক্ষমতার পরিবর্তন মানে রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তন।’  এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্পষ্ট করেছেন, বিএনপি ভবিষ্যতে কোনো ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জড়াবে না। বরং সব পক্ষকে নিয়ে একটি সমঝোতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে চায়।

তারেক রহমান তাঁর একাধিক বক্তব্যে বলেছেন, এই সংকট কোনো একক সরকারের ব্যর্থতা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতিগত দুর্বলতার ফল। সে কারণে তিনি সমাধানের ক্ষেত্রেও দলীয় সীমানা ছাড়িয়ে ‘ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য’-এর ওপর জোর দিয়েছেন। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তারেক রহমান একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বাস্তবতা স্বীকার করছেন—বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলেও যদি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো একই রকম দুর্বল ও বিতর্কিত থেকে যায়, তাহলে সংকটের পুনরাবৃত্তি অনিবার্য। তারেক রহমানের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি সমঝোতাকে তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর দাঁড় করিয়েছেন।

প্রথমত, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পুনঃপ্রতিষ্ঠা। তাঁর মতে, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়। তাই, নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন প্রশাসন এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি তাঁর বক্তব্যে বারবার ফিরে আসছে।

দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার। বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংসদের কার্যকর ভূমিকা—এসব প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত না করলে গণতন্ত্র কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকবে বলে তিনি মনে করেন।

আরও পড়ুন

তৃতীয়ত, রাজনৈতিক সহনশীলতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। তারেক রহমানের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, বিরোধী মত দমন করে দীর্ঘমেয়াদে কোনো সরকারই স্থিতিশীল থাকতে পারে না।
এই তিনটি স্তম্ভই তাঁর ভাষায় ‘ন্যূনতম ঐকমত্য’-এর ভিত্তি, যেখানে সব দল একমত না হলেও রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক নিয়মগুলো নিয়ে একটি সমঝোতা থাকা প্রয়োজন।

৩১ দফা: আধুনিক রাষ্ট্রের নীলনকশা: বিএনপির ৩১ দফা কেবল একটি রাজনৈতিক প্রচারপত্র নয়, এটি তারেক রহমানের দীর্ঘদিনের চিন্তাপ্রসূত একটি রাষ্ট্রীয় সংস্কার সনদ। এই ৩১ দফায় রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তম্ভের সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। যেমন- দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ: ৩১ দফার অন্যতম প্রধান প্রস্তাব হলো সংসদে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ প্রবর্তন। তারেক রহমান মনে করেন, এটি করলে দেশের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও দক্ষ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য: বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে যে একক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে, তা নিরঙ্কুশ ক্ষমতার জন্ম দেয়। ৩১ দফায় এই ক্ষমতা ভারসাম্যপূর্ণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে না পারে।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি স্থায়ী সাংবিধানিক ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।
দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী নয়: শেখ হাসিনার মতো কোনো ব্যক্তি যেন দীর্ঘদিন ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারেন, সেজন্য পরপর দুই মেয়াদের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

‘রেইনবো নেশন’ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ: তারেক রহমান এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন যেখানে মানুষের পরিচয় হবে শুধুই ‘বাংলাদেশি’। তিনি সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু এই বিভাজন মুছে ফেলতে চান।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের পরিচয় একটিই—আমরা বাংলাদেশি। বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই সমান নাগরিক। মন্দিরে হামলা বা ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’
তারেক রহমানের এই ‘রেইনবো নেশন’ বা রংধনু জাতির ধারণাটি মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ম্যান্ডেলা বিভেদ নয় বরং ঐক্যের মাধ্যমে রাষ্ট্র গঠনের কথা বলেছিলেন।

সংস্কারের মালিকানা কার: বর্তমানে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, সেখানেও তারেক রহমানের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি মনে করেন, সংস্কার কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিষয় নয়, এতে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে।
গত বছরের ১৫ আগস্ট দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে টেকসই সংস্কার তখনই সম্ভব, যখন এর পেছনে জনগণের ম্যান্ডেট বা ভোট থাকবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থেকে রাষ্ট্রের স্থায়ী সংস্কার করতে পারেন।’  তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করার পাশাপাশি বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই হলো শ্রেষ্ঠ সংস্কার।
তৃণমূলের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহি: তারেক রহমান বিএনপির অভ্যন্তরেও সংস্কার এনেছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, জনগণের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে বা চাঁদাবাজিতে জড়ালে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর এক সাংগঠনিক নির্দেশনায় তিনি বলেন, ‘আপনারা জনগণের মন জয় করুন। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। মনে রাখবেন, বিএনপি জনগণের দল। জনগণের ভালোবাসা হারিয়ে আমরা রাজনীতিতে টিকে থাকতে চাই না।’ 
তাঁর এই বক্তব্য প্রমাণ করে, তিনি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে সাধারণ মানুষকে রাখতে চান।

জাতীয় ঐক্যের সরকার: তারেক রহমান একটি অনন্য প্রস্তাব দিয়েছেন, নির্বাচনের পর বিএনপি এককভাবে নয়, বরং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি ‘জাতীয় ঐক্যের সরকার’ গঠন করবে। তাঁর এই বক্তব্য বাংলাদেশের প্রচলিত ‘বিজেতা সব পায়’ রাজনীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। এই প্রস্তাবটি সত্যিকার অর্থে দেশে জাতীয় সমঝোতার সর্বোচ্চ রূপ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর বক্তব্য ও বিএনপির ৩১ দফা বিশ্লেষণ করলে একটি বিষয় স্পষ্ট, এখানে রাজনৈতিক ভাষায় পরিবর্তনের চেষ্টা আছে। সরাসরি ক্ষমতা দখলের বয়ান থেকে সরে এসে তিনি ও তাঁর দল রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনাকে সামনে এনেছেন। এই পরিবর্তন কতটা বাস্তব, আর কতটা কৌশলগত—সে প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দেবে। তবে এটুকু বলা যায়, ‘সমঝোতার রাজনীতি’নিয়ে এই আলোচনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক কাঠামো যুক্ত করেছে। এখানে প্রশ্নটি শুধু কে ক্ষমতায় যাবে তা নয়, বরং কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে সেটাও মুখ্য হয়ে উঠেছে।
তারেক রহমানের ‘জাতীয় সমঝোতা’ এবং ‘৩১ দফা’ কেবল রাজনৈতিক কৌশল নয়, এটি একটি আধুনিক, প্রগতিশীল ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার ভিশন। দীর্ঘ প্রবাস জীবন ও রাজনৈতিক লড়াই তাঁকে বাস্তবমুখী হতে শিখিয়েছে। তাঁর বর্তমান বক্তব্য এবং পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির সেই পুরোনো সংঘাতময় অধ্যায়টি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে চান।
এখন দেখার বিষয়, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ জনগণ এই আহ্বানে কতটা সাড়া দেয়। তবে এটি নিশ্চিত, তারেক রহমানের এই রূপরেখা বাংলাদেশের আগামীর রাজনীতির প্রধান পথনির্দেশক হতে যাচ্ছে।

লেখকঃ অস্ট্রেলিয়ার সরকারি ডিপার্টামেন্টে কর্মরত।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরে ক্যানেল থেকে এক ব্যক্তির গলাকাটা  মরদেহ উদ্ধার

শ্রীপুরে ডেকে নিয়ে জাসাস নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

হাদি হত্যায় অভিযুক্ত আলমগীরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অস্ত্রসহ গ্রেফতার

পাবনার ফরিদপুরে পানিতে ডুবে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

অভিনব দক্ষতায় সবাইকে ছাড়ালেন হকি খেলোয়াড় আমিরুল

জাতীয় সমঝোতা: তারেক রহমানের নতুন রাজনীতির রূপরেখা