কেবল প্রতিশ্রুতি আর প্রতিশ্রুতি
রংপুরের তারাগঞ্জে যমুনেশ্বরী কালুর ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ হয়নি দীর্ঘদিনেও
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুটি ও সয়ার ইউনিয়নের মধ্যবর্তী যমুনেশ্বরী নদীর কালুর ঘাটে দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানালেও তা হয়নি। উপজেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে কালুর ঘাট যমুনেশ্বরী নদীর একটি গুরুত্বপূর্ণ খেয়া ঘাট। শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করলেও বর্ষায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো সাঁকো ডুবে যায়। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হন স্থানীয়রা।
জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে নৌকা বা কলা গাছের ভেলা ছাড়া নদী পাড়াপাড়ের উপায় থাকে না। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে এবং শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে বিড়ম্বনায় পড়েন প্রতিনিয়ত। মানুষ ও যান চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ ঘাটে পূর্বের সাংসদরা ব্রিজ নির্মার্ণের প্রতিশ্রুতি দিলেও সে কথা রাখেনি কেউ।
ব্রিজ না থাকায় মাঝাপাড়া, কুমার পাড়া, পাটনীপাড়া, পাচানীপাড়া, চিলাপাক, পরামানিক পাড়া, দোলাপাড়া, জলুবার, বানিয়াপাড়া, উজিয়াল, মন্ডলপাড়া, মেনানগড়, কালারঘাট, ডাঙ্গাপাড়া, ঝাকুয়াপাড়া, মাছুয়াপাড়া, রহিমাপুর, খলেয়া নন্দরাম, বুড়িরহাট, বড় দোলাপাড়াসহ ২০টি গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীরা দুর্ভোগ পোহান।
সরেজমিনে কালুর ঘাট গেলে স্থানীয়রা জানায়, সয়ার ও হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই ঘাট। নিজেদের উদ্যোগে বছরের পর বছর সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক যোগাযোগ গড়ে না উঠায় অর্থনৈতিক দিক থেকে এ অঞ্চল পিছিয়ে পড়েছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না।
আরও পড়ুনডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, এলাকার বেশিরভাগ কৃষক সবজি চাষি। উৎপাদিত সবজির একমাত্র মোকাম তারাগঞ্জ সদরের হাট-বাজার। কিন্তু ব্রিজ না থাকায় ৭ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে উৎপাদিত সবজি বাজারে নিতে হয়। ফলে পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। এলাকার সমাজ সেবক এজাজ উদ্দিন বলেন, একটি ব্রিজের অভাবে বছরের ৯মাস অবরুদ্ধ জীবনযাপন করতে হয়। রাজনৈতিক নেতারা প্রতিশ্রুতি দিলেও ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় ২০ গ্রামের মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি।
হাড়িয়ারকুঠি ইউপি চেয়ারম্যান কুমারেশ রায় ও সয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবাদত হোসেন পাইলট বলেন, এ বিষয়ে অসংখ্যবার উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে বারবার ব্রিজ নির্মাণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আবেদন করা হয়েছে কিন্তু ফল হয়নি। ব্রিজের অভাবে হাড়িয়ারকুঠি ও সয়ার ইউনিয়ন দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে।
মন্তব্য করুন










