জয়পুরহাটের কালাইয়ে যুবকের প্রতি স্ত্রী ও শ্যালকের বর্বরতা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : মায়ের ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রাসেল আহম্মেদ (৩০) নামে এক যুবককে তুলে নিয়ে চাঁদাবাজ অ্যাখ্যা দিয়ে রাতভর শারিরিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশের শরনাপন্ন হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহায়তায় শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধারের পর তাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তার ডান পা ভেঙ্গে গেছে। বাম কানে আঘাত করায় কিছু শুনতে পাচ্ছেন না। গত বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নিশ্চিন্তা-ইটাখোলা সড়কের ভাবকি মোর থেকে শ্যালক শাহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ভুক্তভোগী যুবকের পরিবার জানায়, রাসেলের স্ত্রী ও শ্যালকদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মোবাইল ফোনে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে রাসেলকে অপহরণ করা হয়। পরে তাকে কালাই পৌরশহরের আওড়া মহল্লার নির্জন স্থান ও শ্বশুরবাড়ি একই উপজেলার একডালা গ্রামে নিয়ে বড় শ্যালক শাহিদুলের নেতৃত্বে রাতভর মারপিট ও অমানসিক নির্যাতন করে।
পরের দিন বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে রাসেলের বাবা একই উপজেলার দক্ষিণ পাকুরিয়া গ্রামের মুক্তার আলী থানায় বিষয়টি অবহিত করেন। বিকেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসান আলীর সহযোগিতায় রাসেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তার বাবা।
সরেজমিনে আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে জয়পুরহাট হাসপাতালে গিয়ে দেখা মেলে রাসেলের সাথে। ডান পায়ে ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় রাসেল বেডে শুয়ে আছেন। পাশেই আছেন তার বৃদ্ধ বাবা। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠেন বাবা মুক্তার আলী। তিনি বলেন, ছেলেকে বিনা দোষে তুলে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে পা ভেঙ্গে দিয়েছে। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে। স্থানীয়রা না দেখলে হয়তো ছেলেকে ওরা হত্যা করতো। তিনি বলেন, ছেলের চিকিৎসার জন্য আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। তবে আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুনহাসপাতাল বেডে শুয়ে রাসেল বলেন,‘ওরা নির্মমভাবে আমাকে মেরেছে। যার নেতৃত্ব দিয়েছে আমার স্ত্রীর বড় ভাই ও তার কয়েকজন বন্ধু এবং রনি নামের এক আত্মীয়। তিনি বলেন,‘পানি খেতে চাওয়ায় মুখে প্রস্রাব করে দিয়েছে রনি। কানেও শুনতে পাচ্ছি না। প্রচন্ড আঘাত গোটা শরীরে।
মোবাইল ফোনে আমি না-কি ১৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে ম্যাসেজ দিয়েছি। ওরা মারপিট ও হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার সেই স্বীকারোক্তি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছেড়ে দিয়েছে। শ্যালক শাহিদুল ও স্ত্রী শাকিলার চক্রান্তে আমার ওপর এ বর্বরতা চালানো হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, নির্যাতিত যুবক রাসেল আহমেদের শ্যালক শাহিদুল ইসলাম চাঁদা দাবির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এটি হয়েছে। কিন্তু রাসেলকে ধরে এনে মারপিট করার বিষয়টি জানানো হয়নি। পরে উভয় পক্ষ এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। মামলা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন