কাশবন ঘিরে পাবনার বেড়ায় যমুনার চর হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি: প্রতিদিন বিকেল নামলেই পাবনার বেড়া উপজেলায় যমুনার পাড়ে ভিড় জমে। কেউ দল বেঁধে, কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ আবার বন্ধুদের সাথে নৌকায় চড়ে পাড়ি জমান নদীর ওপারে। গন্তব্য- বেড়া উপজেলার দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা, চরনাগদা, চরনাকালিয়া, চরসাঁড়াশিয়াসহ কয়েকটি চর। কারণ, এই চরে এখন কাশফুলে ছেয়ে গেছে চারদিক। বাতাসে দুলছে সাদা ফুলের ঢেউ, যেন নদীর বুকে নেমে এসেছে ধবল মেঘের রাজ্য।
শুধু বেড়াতে নয়, সাঁথিয়া, শাহজাদপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার দূর-দূরান্তের মানুষ আসছেন এই ধবল সৌন্দর্য দেখতে। যমুনার এপার থেকে নৌকায় ভেসে নদী পার হওয়ার সাথে সাথে চোখে পড়ে কাশফুলে ভরা চরগুলো। কেউ মুঠোফোনে ছবি তুলছেন, কেউ আবার কাশফুল হাতে পোজ দিচ্ছেন। শিশুরা ছুটে বেড়াচ্ছে কাশবনের ভেতর, নদীর হাওয়া আর মেঘলা আলোয় যেন অন্যরকম আনন্দ খুঁজে পায় সবাই।
স্থানীয়রা জানান, বেড়া উপজেলার যমুনার চরগুলোতে ভাদ্র মাসের শেষ দিকে কাশফুল ফুটতে শুরু করে। এ সময় পুরো এলাকা সাদা হয়ে যায়। কার্তিক মাস পর্যন্ত কাশফুল থাকে। আর এই সময়টায় কাশফুলের সৌন্দর্যের টানে বেড়া উপজেলাসহ পাশের অন্যান্য উপজেলা এমনকি পাবনা জেলা শহর থেকেও প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে এসে ভিড় জমান। দুই থেকে আড়াই মাসব্যাপী কাশফুলের সাদা-ধূসর সাম্রাজ্য সবাইকে মুগ্ধ করে।
পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের নিয়ে কাশবনে বেড়াতে এসেছিলেন মনজুর কাদের মহিলা কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বরুন রায়। তিনি বলেন, চারদিকে যেন ধবল রাজ্য। এমন দৃশ্য চোখে পড়লে মনে হয় স্বপ্নের জগতে চলে এসেছি। বাচ্চারা কাশবনে ছোটাছুটি করে ছবি তুলছে, আনন্দ করছে, দেখে মন আরও ভরে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনবেড়া পৌর এলাকার আলহেরা একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আদৃতা রায় অন্তি বলে, আমাদের বেড়া উপজেলার চরগুলো এমনিতেই সুন্দর। এর ওপর শরতের মোহনীয় কাশফুলের কারণে চরের সৌন্দর্য অনেক গুণ বেড়ে যায়।
যমুনাপাড়ের পেঁচাকোলা গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য সেল্টু মিয়া বলেন, যমুনার পেঁচাকোলা ঘাট থেকে কাশফুলে ভরা চরে যেতে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। দর্শণার্থীদের ভিড়ের কারণে আমাদের এই পেঁচাকোলা ঘাট একরকম পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, যমুনার এই চরগুলোর বেশির ভাগ জায়গায় জনবসতি নেই। নতুন চরজুড়ে কাশফুল ফুটে তৈরি হয়েছে এক অনন্য দৃশ্যপট। তাই এখন বেড়ার এই চরগুলো হয়ে উঠেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের প্রিয় ভ্রমণগন্তব্য।
মন্তব্য করুন