আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম-খুন নিয়ে ডকুমেন্টারির একটি শুটিংয়ে অংশ নিতে সিলেটে পৌঁছেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে সিলেট ওসামনী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
এসময় সিলেট বিএনপির নেতারা তাকে স্বাগত জানান। পরে বিমানবন্দর থেকে তিনি সিলেটের গোয়াইনঘাট তামাবিল স্থলবন্দরে যান।
২০১৫ সালের ১০ মে সন্ধ্যায় তাকে এই পথে ভারতের শিলং নেয়া হয় বলে দাবি করেন সালাউদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম-খুন নিয়ে ডকুমেন্টারি করা হচ্ছে। সেই ডকুমেন্টারির অংশের শুটিংয়ে অংশ নিতে তিনি তামাবিল সীমান্তে যান।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন দলীয় কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে সিলেটে আসেননি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়ার ঘটনায় সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় এবং গুম কমিশনের উদ্যোগে একটি ডকুমেন্টারির শ্যুটিংয়ে অংশ নিতে তিনি এসেছেন। এসময় তিনি ২০১৫ সালে তার গুম হওয়ার ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন।
তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে চোখ বেঁধে কাদা মাটি দিয়ে হাটিয়ে নেওয়া হয়েছিল, এক পর্যায়ে তাকে সিঁড়ি বেয়ে কোনো উঁচু জায়গায় উঠিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ইংরেজিতে এবং সোলজাররা হিন্দি ভাষায় কথা বলেছিলেন সে বিষয়গুলো তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
২০১৫ সালের ১০ মার্চ গুম হওয়ার ৬৩ দিন পর তাকে ভারতের শিলং-এ পাওয়া যায়। শিলংয়ে আইনি জটিলতা ও মামলা মোকাবেলা করার কারণে তিনি প্রায় ৯ বছর সেখানে অবস্থান করেন। দেশে ফেরার পথ সুগম হয় ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফিরেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনার তদন্ত করতে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্টগার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগকারী বা বলবৎকারী কোনো সংস্থার সদস্যের হাতে জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও তদন্তের জন্য এই কমিশন গঠন করা হয়েছে।
দেশে ফেরার ১০ মাস পর ৩ জুন সালাহউদ্দিন আহমেদ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তিনি সরাসরি চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গিয়ে এই অভিযোগ জমা দেন।