দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গামেলা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে হয়েছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গামেলা। বিজয়া দশমীর দিনে আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ছোট যমুনা নদীর পাড়ে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠে এই মেলা বসে।
সকাল থেকে শুরু হয় মেলার আয়োজন। দুপুরের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপের দুর্গা প্রতিমা সেখানে নিয়ে এসে মেলা প্রাঙ্গণের পূর্বপাশে নদীর তীরে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে মেলা চত্বর।
মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখরিত মেলা। শাঁখা, সিঁদুর, চুড়ি, মালা ছাড়াও রামায়ণ, মহাভারতসহ হিন্দু ধর্মের নানা বিষয়ের ওপরে লেখা বই, শিশুদের খেলনা, মিষ্টান্ন, কসমেটিকস, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাহারি মুখোরোচক খাবার, মাটির তৈরি শো-পিস ও বিভিন্ন প্রকার মৌসুমি ফলসহ হরেক রকমের পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মেলায় এসেছে ঘরের শোভাবর্ধনের নানা উপকরণ। এসব পণ্য কেনার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা মেলায় এসে ভিড় জমায়। এর মধ্যে শিশু-কিশোরদের আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
মেলায় আসা বিশ্বনাথ রায় (৫০) বলেন, ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে এই দুর্গা মেলায় আসতাম। এখন নাতি-নাতনিদের নিয়ে আসছি। অতীতে ফুলবাড়ীতে জমিদারদের বসবাস ছিল। তারাই দশমীর দিনে এই দুর্গামেলার আয়োজন করতেন। সেই থেকে এই মেলা চলে আসছে। এটি শত বছরের একটি পুরোনো মেলা। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে বসা এই মেলা ফুলবাড়ীর শত বছরের ঐতিহ্য। দশমী বা বিসর্জনের দিনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফুলবাড়ীসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন ধর্মের মানুষ কেনাকাটা করার জন্য এ মেলায় আসেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আনন্দ কুমার গুপ্ত বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় প্রতিবছর বিভিন্ন এলাকার হাজারও মানুষের সমাগম ঘটে। আমরা ছোট বেলা থেকে বিজয়া দশমীর দিনে এই মেলা দেখছি। এখন আমাদের পরের প্রজন্মও দেখছে-দেখবে।
এই মেলা আমাদের ঐতিহ্য। তিনি আরও জানান, এবার ফুলবাড়ীতে মোট ৬১টি মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে মেলা পরিদর্শন করেছেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসাহাক আলী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম খন্দকার মুহিব্বুলসহ প্রসাশনের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ।
মন্তব্য করুন