দ্বিতীয় দিনের মত চাঁ‘নবাবগঞ্জ রাজশাহী নাটোর থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল দ্বিতীয় দিনের মত বন্ধ রয়েছে। ফলে গত সোমবার সকাল থেকে দূরপাল্লার রুটে ২/১টি কোম্পানী ছাড়া বাস চলাচল করেনি।
আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে বেশিরভাগ কাউন্টার খোলেইনি। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বাস স্ট্যান্ডে এসে ফিরে যাচ্ছেন বা বিকল্প উপায় বেছে নিচ্ছেন। তবে বেতন, ভাতা নিয়ে সমস্যা নেই এমন গুটিকয়েক কোম্পানীর বাস চলাচল করছে বলে শ্রমিক সূত্র জানিয়েছে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শুধু একটি কোম্পানী বাস চালাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় তিন জেলার শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানান, বিকেলে সমস্যা সমাধানে ঢাকায় মালিক ও শ্রমিকদের সভা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাঙ্কলরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, বেতন ও আনুসাঙ্গিক বিভিন্ন ভাতার দাবিতে চলতি মাসের ৮ ও ৯ তারিখ রাজশাহীর বাস শ্রমিকরা এ ধর্মঘট প্রথম শুরু করে। পরে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্যা সমাধানে মালিক নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু মালিকরা আবার সময় চাইলে তিন জেলার বাস শ্রমিকরা গত সোমবার থেকে একযোগে কোচ চলাচল বন্ধ করে দেন।
তিনি আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা রুটে একটি কোচের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার এই তিন শ্রমিক একত্রে বর্তমানে প্রতি ট্রিপে (একবার যাওয়া ও ফেরৎ আসা বা আপ ও ডাউন) ২ হাজার ৭৮৫ টাকা বেতন ও আনুসাঙ্গিক খরচ পান। রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে বেতন ও খরচ দেয়া হচ্ছে এর থেকে ১০০ টাকা কম ২ হাজার ৬৮৫ টাকা।
আরও পড়ুনঅন্যান্য বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটেও আনুপাতিক হারে বেতন-ভাতা দেয়া হয়। গড়ে একজন বাস শ্রমিক মাসে ১২/১৪ টির বেশি ট্রিপ পান না। সাধারনত একটি ট্রিপের পর অন্তত: একদিন বসে থাকতে হয় পরের ট্রিপের জন্য। শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি, এই আমনবিক ও অনায্য বেতন ও খরচ বাড়ানো হোক। তাদের দাবি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা রুটে প্রতি ট্রিপে এটি ৫ হাজার টাকা এবং রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে এটি ৪ হাজার ৭ শত টাকা করা হোক।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, এই সমস্যার সাথে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ বাস ও ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশন সম্পৃক্ত। তারা বারবার দাবি পূরণে বসার আশ্বাস দিলেও দাবি পূরণের কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বারবার কালক্ষেপণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর বসার কথা থাকলেও তারা বসেননি বরং আবার ২৮ সেপ্টেম্বর বসার কথা বলেছেন। ফলে বাধ্য হয়ে গত সোমবার থেকে বিশেষ করে বড় বাস কোম্পানীর শ্রমিকরা তিন জেলা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। তবে ২/৩টি কোম্পানীর অল্প সংখ্যক বাস চলছে।
নাটোর মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, নাটোর থেকে শুধু একটি কোম্পানীর কোচ চলছে। তিন জেলার শীর্ষ শ্রমিক নেতারা বলেন, এ অবস্থায় আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকায় শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সভা আহবান করা হয়েছে। সভায় সমঝোতার চেষ্টা হবে।
মন্তব্য করুন