ভিডিও শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

টাঙ্গাইলে সাত মাসে সাপের কামড়ের শিকার ৫৩৫ জন

টাঙ্গাইলে সাত মাসে সাপের কামড়ের শিকার ৫৩৫ জন

টাঙ্গাইলে বাড়ছে সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা। গত সাত মাসে জেলায় সাপের কামড়ে ৫৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৭২ জন রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি ৪৬১ জন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ সময়ে সাপের কামড়ে জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, সাত মাসে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৫ জন, জেনারেল হাসপাতালে ১২২ জন, মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ৬৪ জন, দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন, ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন, ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন, বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন, নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮ জন, মিজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৩ জন, সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯৮ জন, কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭, ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৩ জন, মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৮ জন এবং গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৭২ জনকে স্থানান্তর করা হয়।

একই সময়ে সাপের ছোবলে আহত রোগীদের মধ্যে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৭৩ জন, জেনারেল হাসপাতালের ১২২ জন, কুমুদিনী হাসপাতালের ৬৪ জন, নাগরপুরে ১৬ জন, দেলদুয়ারে ৪ জন, বাসাইলে ৬ জন, মির্জাপুরে ২২ জন, সখীপুরে ৮১ জন, কালিহাতীতে ৪ জন, ঘাটাইলে ১০ জন, ভূঞাপুরে ১২ জন, গোপালপুরে ১৬ জন, মধুপুরে ২৯ জন এবং ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুজন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

এ সময়ে সাপের ছোবলে আহত হয়ে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দুজন রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তারা হলেন, নাগরপুর উপজেলার মন্টুর স্ত্রী আসমা খাতুন ও ভূঞাপুর উপজেলার আমিনুর রহমান। তাদের মধ্যে আমিনুর রহমানকে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দেওয়া হলেও তিনি মারা যান।

সাপের ছোবলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া আসমা খাতুনের মেয়ে হামিদা খাতুন বলেন, ‘আমার মাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের ১১ জুন ভর্তি করি। ভর্তির পরপর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভ্যাকসিন ইনজেকশন দেওয়ার জন্য একটি কাগজে দ্রুত অ্যান্টিভেনম এনে দেওয়ার জন্য লিখে দেন। ভ্যাকসিন ইনজেকশনটি বাইরে থেকে কিনে এনে দিলে চিকিৎসক পুশ করে এবং তার মাকে স্যালাইন দেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মারা যান।

একই মাসে ভূঞাপুর উপজেলার আমিনুর রহমানকে হাসপাতালে ভর্তি করে দুই ঘণ্টা পর অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন পুশ করার প্রস্তুতির কালে তিনি মারা যান। আমিনুর রহমানের বোনের স্বামী পারভেজ বলেন, ‘সাপের ছোবলে আহতাবস্থায় আমিনুর রহমানকে টাঙ্গাইল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির ২ ঘণ্টা পর চিকিৎসকরা জানান সেখানে অ্যান্টিভেনম নেই। অ্যান্টিভেনম না থাকায় বাইরে থেকে কিনে আনতে পরামর্শ দেন। বাইরে থেকে অ্যান্টিভেনম কিনে এনে দিলেও আমিনুর রহমানকে বাঁচানো যায়নি।

আরও পড়ুন

তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে দুজন চিকিৎসক অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন নিয়ে সিন্ডিকেটে জড়িত। হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম থাকলেও রোগীদের বাহির থেকে কিনে আনতে বলে। চিকিৎসক শাহরিয়া রহমান একটি কাগজে অ্যান্টিভেনম রোগী ভর্তির দুই ঘণ্টা পরে লিখে দিয়ে বলেন দ্রুত নিয়ে আসেন। যথারীতি ঠিকানা অনুযায়ী সেখানে দেখতে পান একই হাসপাতালের চিকিৎসক আতিকুর রহমান। তার কাছ থেকে অ্যান্টিভেনম ১৪ হাজার টাকা দাম মিটায়। ২০০০ হাজার টাকা নগদ দিয়ে বাকি ১২ হাজার টাকা রেখে আসেন। ইনজেকশন নিয়ে আসার পর চিকিৎসক অ্যান্টিভেনম মিকচার করে পুশ করা অবস্থায় রোগীকে মৃত ঘোষণা করে।

এ বিষয়ে চিকিৎসক আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমার নিজের প্রয়োজনে ইনসেপ্টা কোম্পানির দুটি ইনজেকশন ফার্মেসিতে রেখে দিয়েছিলাম। কখন কার বিপদ আসে সেটাকে মোকাবেলা করাতে আমার রাখা।

দ্দুছ বলেন, ‘হাসপাতালে বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম রয়েছে। এছাড়াও অ্যান্টিভেনম নিয়ে কোনো চিকিৎসক রোগীকে বিভ্রান্ত করার কথা নয়।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. ফরাজী মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম মঞ্জু বলেন, ‘সর্প দংশনের প্রতিষেধক জেলায় ১৩ হাসপাতালে ৩৪৫টি রয়েছে। আশা করছি এর সংকট হবে না।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শবনম ফারিয়ার পোস্ট, কমেন্টে যা বললেন সারজিস আলম

বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো কাদের ও লতিফ সিদ্দিকীর ভাইকে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৩০ বাংলাদেশি

নারী ক্রিকেটে কাউন্সিলরশিপ দাবি

শ্রীলঙ্কায় বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৫

ইউরোপকে অবশ্যই রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে হবে: ট্রাম্প