ঋণের চাপে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে শিক্ষককের আত্মহত্যা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : ঋণের চাপে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারুক হোসেন (৪৯) নামে এক শিক্ষক। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেলগেটে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জয়পুরহাট সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে। নিহত শিক্ষক ফারুক হোসেন কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হারুঞ্জা গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে। তিনি হারুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করতেন। প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষক ফারুক হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত। এক হাত অবশ হওয়ার কারণে তিনি ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারেন না। অসুস্থতার কারণে তিনি বিভিন্ন এনজিও, সমবায় সমিতি ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া ঋণের চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মাসিক বেতনের টাকার বেশিরভাগ অংশই ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধে ব্যয় হতো। ফলে সাংসারিক ব্যয় চালাতে হিমশিম খেতে হতো। বেশ কয়েকদিন ধরে পরিবারের লোকজনদের সাথেও তিনি তেমন একটা কথাবার্তাও বলতেন না। বুধবার বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে গিয়ে বাহিরে যাওয়ার জন্য বের হন। এরপর তিনি জয়পুরহাট হয়ে পাঁচবিবিতে যাওয়ার পথে পুরানাপৈল রেলগেটে গিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামী ঋণের চাপেই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার এবং সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়, তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
মন্তব্য করুন