ভিডিও বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চীনা জাতির পুনর্জাগরণ এখন আর ঠেকানো যাবে না : শি জিনপিং

চীনা জাতির পুনর্জাগরণ এখন আর ঠেকানো যাবে না : শি জিনপিং, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজে বিশ্বকে শান্তি ও সংলাপের পথে হাঁটার আহ্বান জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অনুষ্ঠানে তার পাশে ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। এসময় চীনের অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বুধবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সতর্ক করে বলেন, বিশ্ব এখন শান্তি নাকি যুদ্ধ-এই মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে জাপানের পরাজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও উপস্থিত ছিলেন। তবে পশ্চিমা কোনও দেশের নেতা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। শি জিনপিংয়ের পাশাপাশি অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমাদের চোখে একঘরে হয়ে পড়া পুতিন ও পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য সমালোচিত কিম।

শি জিনপিং বলেন, আজ মানবজাতি শান্তি নাকি যুদ্ধ, সংলাপ নাকি সংঘাত, পারস্পরিক লাভ নাকি শূন্য-সমীকরণের মধ্যে একটির পথ বেছে নেবে। চীনা জনগণ ইতিহাসের সঠিক পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।এর আগে খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে শি জিনপিং সেনাদের সালাম গ্রহণ করেন এবং মিসাইল, ট্যাংক, ড্রোনসহ আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম পরিদর্শন করেন। আকাশে হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমানের মহড়া চলে। ৭০ মিনিটের এই শোভাযাত্রার শেষে আকাশে উড়ানো হয় ৮০ হাজার শান্তির কবুতর ও রঙিন বেলুন। মাও সেতুং-এর ধাঁচে তৈরি পোশাক পরে প্রেসিডেন্ট জিনপিং লাল কার্পেটে ২০টিরও বেশি দেশের নেতাদের স্বাগত জানান। এর মধ্যে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোও। নিজের দেশে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেও হঠাৎ অনুষ্ঠানে হাজির হন তিনি। মঞ্চে শি জিন পিংয়ের দুই পাশে বসেন পুতিন ও কিম। একাধিকবার তাদের সঙ্গে আলাপও করেন তিনি।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে কড়া মন্তব্য করে লেখেন, ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উনকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিও, যখন তোমরা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতে আছো। যদিও পরে সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্প বলেন, এই প্যারেডকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন না। জাপান এ বিষয়ে মন্তব্য করা এড়িয়ে গিয়ে জানায়, তারা চীনের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। 

আরও পড়ুন

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারিও এ উপলক্ষ্যে দেওয়া বার্তায় চীনকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ৩ সেপ্টেম্বর দিনটি চীনা জনগণের ত্যাগ ও সাহসিকতার স্মারক, যা বৈশ্বিক শান্তি ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামে অনুপ্রেরণা দেয়।

শি জিনপিং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে চীনের মহান পুনর্জাগরণের বাঁক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, জাপানি আগ্রাসন থেকে উঠে এসে চীন এখন অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক শক্তি। তিনি আবারও ‘শক্তির রাজনীতি ও আধিপত্যবাদ’-এর বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে পরোক্ষভাবে তিনি এই ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই আয়োজন শুধু সামরিক শক্তি প্রদর্শন নয়, বরং ঘরে-বাইরে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলার কৌশলও। একই সঙ্গে এটি রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনারও ইঙ্গিত বহন করে।

রয়টার্স বলছে, গত দুই বছরে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনীর এক ডজনেরও বেশি জেনারেলকে সরিয়েছেন শি জিনপিং। বিশ্লেষকদের মতে, এই প্যারেডে আধুনিক সামরিক অগ্রগতি দেখানো হলেও ভেতরের সংকটগুলো আড়াল করার চেষ্টা ছিল। শি জিনপিং তার ভাষণে বলেন, চীনা জাতির পুনর্জাগরণ এখন আর ঠেকানো যাবে না। অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে সরকারি কর্মচারীদের কুচকাওয়াজ দেখার ও অভিজ্ঞতা লিখে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গ্লোবাল আইকন হিসেবে নতুন মাইলফলকে দীপিকা

লালমনিরহাটে মাদক মামলায় যুবককের যাবজ্জীবন 

সিরাজগঞ্জে ১৫৮ বোতল ফেনসিডিলসহ ৩ নারী গ্রেফতার

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় স্বামীর ওপর অভিমান করে স্ত্রীর আত্মহত্যা

সব রেকর্ড ভেঙে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে স্বর্ণের দাম

খৈয়াছড়া ঝরনায় পর্যটক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৮