তিস্তা নদীর ওপর স্বপ্নের ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন হচ্ছে আগামী বুধবার

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার সংযোগকারী সড়ক তিস্তা নদীর ওপর স্বপ্নের মওলানা ভাসানী সেতু আগামী বুধবার উদ্বোধন করা হচ্ছে। এর আগে গত ১১ আগস্ট স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এই তারিখ নিশ্চিত করা হয়েছে। উদ্বোধনের দিন থেকেই সেতুটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
সেতুটি উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিস্তা নদীর ওপর দিয়ে নির্মিত তিস্তা সেতু নামকরণ থাকলেও গত রোববার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে সেতুর নাম পরিবর্তন করে ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ নামকরণ করা হয়।
এর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের সাথে দেশের যোগাযোগে ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সেতুটির উদ্বোধন উপলক্ষে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। চারদিকে সাজ-সাজ রব ও আনন্দে মেতে উঠেছে সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারীবাসী। সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে এলাকাবাসী ও বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
এটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরঘাট থেকে তিস্তা নদীর ওপর দিয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি এলজিইডির একটি বৃহৎ প্রকল্প। সেতুটি সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউণ্ডেশনের অর্থায়নে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করেছে।
আরও পড়ুনসেতুটি নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সেতুটিতে ৩১টি স্প্যান, উন্নত লাইটিং ব্যবস্থা এবং উভয়পাশে প্রায় ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার নদী শাসন ব্যবস্থা রয়েছে। এর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৮৬ কিলোমিটার। এছাড়া অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১৩৩ একর জমি। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি এই সেতুর ফলক উন্মোচন করা হলেও নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও নানা জটিলতা কাটিয়ে চলতি বছরের ২০ আগস্ট উদ্বোধন হচ্ছে।
এর ফলে দুই জেলার সরাসরি সংযুক্ত মধ্যদিয়ে সড়কপথে যাতায়াতের সময় প্রায় ৪ ঘণ্টা কমে আসবে। সেতুটি চালু হলে দুই পাড়ের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জীবনমানে বড় পরিবর্তন আসবে বলে এলাকাবাসী আশা করছেন। বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি পণ্যের পরিবহন সহজ হবে, যা এই অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
মন্তব্য করুন