ভিডিও শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে আঁকা হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের গৌরবগাথা

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে আঁকা হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের গৌরবগাথা

পদ্মা সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ম্যুরালে অঙ্কিত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থােনর নতুন চিত্রকর্ম। এই চিত্রকর্ম শুধু রঙ আর রেখার খেলা নয়, বরং জুলাই শহীদ ও গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে ধারণ করে জাতির সংগ্রামী ইতিহাসকে নতুন করে তুলে ধরার এক ব্যতিক্রমী প্রয়াস।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের দিকনির্দেশনায় এই বিশেষ গ্রাফিতি অঙ্কনের কাজ চলছে। দেশের বৃহত্তম অবকাঠামোগুলোর অন্যতম পদ্মা সেতুর প্রান্তিক এলাকাগুলো এখন পরিণত হচ্ছে এক নান্দনিক ইতিহাসের প্রদর্শনীতে। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে শিল্প, স্থাপত্য আর সংগ্রামী চেতনার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ গড়ে তোলা হচ্ছে। যা নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসকে তুলে ধরার পাশাপাশি তাদের মানসিক জগতে অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশের গৌরবময় অতীতের এক অনন্য অধ্যায় হয়ে রয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান। দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, সেই বীর শহীদদের স্মৃতিকে অম্লান রাখতেই এই কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রাফিতির মধ্য দিয়ে সেই আত্মত্যাগের গৌরবগাথা শিল্পরূপে সেতুর স্থাপত্যের সঙ্গে মিলিয়ে তুলে ধরা হচ্ছে, যাতে করে তা হয়ে ওঠে সময়ের সেরা শিল্পকর্মগুলোর একটি।

এই কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শনে গতকাল মাওয়া প্রান্তে উপস্থিত হন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ। তার সঙ্গে ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন শেখ, প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদাউসসহ আরও অনেকে। সবার উপস্থিতিতে সেতুপ্রান্তের দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতির নানা দিক পর্যবেক্ষণ করা হয়।

সেতু সচিব বলেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনা ও শহীদদের আত্মত্যাগ জাতির চিরন্তন সম্পদ। এই গ্রাফিতির মাধ্যমে সেই ইতিহাসকে ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা শুধু নান্দনিকতাই নয়; বরং গভীর এক বার্তার বাহক। এটি ইতিহাস ও শিল্পের মেলবন্ধন।

আরও পড়ুন

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, এই উদ্যোগ জাতির হৃদয়ে নতুন প্রেরণা জাগাবে। শিল্প শুধু রুচির বিষয় নয়; শিল্প হতে পারে স্মৃতি ধারণের এক বলিষ্ঠ মাধ্যম, যা ইতিহাসের ধ্বনি ছড়িয়ে দিতে পারে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

এই উদ্যোগে শিল্পী ও কারিগরদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের আগ্রহও লক্ষণীয়। অনেকেই কাজ দেখতে আসছেন, ছবি তুলছেন, নিজেদের সন্তানদের নিয়ে এসে বলছেন শহীদদের গল্প। এ যেন এক চলমান ইতিহাস পাঠশালা, যেখানে প্রতিটি রঙে মিশে আছে আত্মত্যাগের গর্ব ও গণআন্দোলনের জয়গান।

যে পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন ও সংযুক্ততার প্রতীক, সেই সেতুর প্রান্তে ঐতিহাসিক চিত্র হিসেবে যুক্ত হলো আরও একটি গৌরবময় অধ্যায়। এটি শুধু স্থাপত্যের গৌরব নয়, বরং ইতিহাসকে বুকে ধারন করার এক দুর্লভ প্রয়াস। যেখানে শিল্প, স্মৃতি ও স্বপ্ন মিলেমিশে সৃষ্টি করেছে ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নওগাঁয় সাড়া ফেলেছে বর্ষাকালীন কালো তরমুজ

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে ফাঁসির ৩ আসামির পালানোর চেষ্টা

কলকাতায় অফিস খুলে কার্যক্রম চালাচ্ছেন হাসিনা: রিজভী

অসহায় মানুষের আশার বাতিঘর গুরুদাসপুরের রাসেল হোসাইন

সিলেটে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন, গ্রেপ্তার ১

ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর পদ, তদন্ত কমিটি গঠন করলো ঢাবি ছাত্রদল