নওগাঁয় সাড়া ফেলেছে বর্ষাকালীন কালো তরমুজ

নওগাঁ প্রতিনিধি : তরমুজ গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও বর্তমানে বর্ষাকালেও এর চাষ হচ্ছে। নওগাঁ সদর ও রাণীনগর উপজেলায় চাষ হওয়া বর্ষাকালীন তরমুজ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সারা বছরই এই তরমুজ চাষ করা গেলেও বর্ষাকালে এর ফলন খুব ভালো হয়।
জেলা কৃষি বিভাগের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী প্রকল্পের মাধ্যমে সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়ন আর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে প্রায় এক একর জমিতে প্রদর্শনীর মাধ্যমে এই তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। মাচায় ঝুলছে কালো কালো জাতের তরমুজ। আবার অনেক তরমুজ জালে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন।
রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান জানান, উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের এই তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। রোপণের মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ দিনে ফসল সংগ্রহ করা যায়।
মালচিং পেপার ব্যবহার করে মাচা পদ্ধতিতে চাষ করলে এর ভালো ফলন পাওয়া যায়। বর্ষাকালে চাষ হওয়া পরিপক্ক প্রতিটি তরমুজের ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এই তরমুজের ভিতরের মাংসল অংশ আকর্ষণীয় গাঢ় লাল রঙের এবং খেতে খুবই সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হয়।
শীতকালে মাটিতে চাষ করলে ৭০-৭৫ দিনে সংগ্রহ করা যায় এবং ওজন ৬ থেকে ৮ কেজি হয়। বর্তমান চাষ হওয়া প্রতিটি ফলের সাইজ ৫শ’ থেকে ৭শ’ গ্রাম হয়েছে। আর ২০ থেকে ২৫ দিন পর ফল সংগ্রহ করা যাবে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫শ’ থেকে ২ হাজারটি তরমুজ পাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুনরাসায়নিক সার ও বালাইনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করে ভালো ফলনের জন্য মালচিং পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই। কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় এবার ২৫ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে মাচায় বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল শশাও রয়েছে। বাজারে প্রতিটি তরমুজের দাম কেজি প্রতি ৫০-৬০টাকা করে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তা মোছা. মোস্তাকিমা খাতুন চৈতি জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে গতাণুগতিক চাষাবাদ থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক ও আগ্রহী কৃষকদের মাধ্যমে অধিক ফলনশীল ও অধিক লাভজনক বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করা হচ্ছে।
তারই একটি অংশ উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের কালো তরমুজ। মূলত বিষমুক্ত সবজি ও ফল উৎপাদনে জৈবিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রবণতা বাড়াতে এবং কৃষকদের সচেতন করতেই এ ধরণের প্রদর্শনী প্রদান করা হয়। আগামীতেও উপজেলাতে উচ্চ ফলনশীল ও অধিক লাভজনক সবজি ও ফল চাষে কৃষি বিভাগের এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন