দিনাজপুরের পাটের ভালো দাম পেয়ে এবার খুশি দিনাজপুরের কৃষকরা

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : ‘সোনালী আঁশ’ বেচে এবার কিনেছি ‘রূপালী ইলিশ’। পাটের ভালো দাম পেয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর গ্রামের কৃষক শান্তি কুমার অধিকারী। শান্তি কুমার অধিকারী জানান, গত শনিবার দিনাজপুর সদর উপজেলার নশিপুর ফার্ম হাটে পাট বিক্রি করতে গিয়ে প্রতি মণ পাট বিক্রি করেন ৩৬শ’ টাকা দরে।
৫ মণ পাট বিক্রি করেন ১৮ হাজার টাকায়। আশাতীত দাম পেয়ে খুশিতে পরিবারের সদস্যদের স্বাদ মেটাতে ২৪শ’ টাকা দরে এক কেজি ইলিশ মাছ ক্রয় করে নিয়ে যান। তিনি বলেন, দাম বেশি হওয়ায় পরিবারের ইচ্ছা সত্বেও বহুদিন থেকে ইলিশ মাছ কেনা হয়নি। তাই পাটের ভালো দাম পাওয়ায় আগে ইলিশ মাছই কিনে নিয়ে বাড়ি গেছেন।
এদিকে শুধু কৃষক শান্তি কুমার নন, পরিবর্তিত জলবায়ুতে এবার পাটের আবাদ করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখীন হলেও সবশেষে পাটের ভালো দাম পেয়ে খুশি দিনাজপুরের অন্যান্য পাট চাষিরা। গত রোববার কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ হাটে ব্যবসায়ীরা প্রতি মণ পাট কিনছেন ৩ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার ৬৫০ টাকা পর্যন্ত।
এই হাটে কাকোর গ্রামের পাট চাষি আনন্দ রায় পাট বিক্রি করতে এসে প্রতি মণ পাট বিক্রি করেছেন ৩হাজার ৬শ’ টাকা দরে। তিনি এবার এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করে দাম পেয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে ভালো দাম পেলেও পাট চাষিরা জানান, এখন আর আগের মতো জলাশয়ে পানি থাকে না।
আরও পড়ুনকমে গেছে খাল-বিলও। এবার দিনাজপুরসহ এই অঞ্চলে সময়মতো বৃষ্টিপাত হয়নি। তাই পানির অভাবে পাট কেটে জাগ দিতে গিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। অনেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে জলাশয় ভরাট করে পাট জাগ দিয়েছেন বলেন জানান।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে দিনাজপুর জেলায় মোট ৪ হাজার ৩৭২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ হাজার টন পাট।
‘সোনালী আঁশ’ হিসেবে পরিচিত এই পাট আবাদ করে এক সময় কৃষকরা বেশ লাভবান হলেও পরবর্তীতে ভালো দাম না পাওয়ায় পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন কৃষকরা। তবে এবার ভালো দাম পাওয়ায় আগামীতে আবারও পাট আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন দিনাজপুরের কৃষকরা।
মন্তব্য করুন