আমরা সমালোচনাকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি : প্রধান উপদেষ্টা

গণতান্ত্রিক চর্চার অন্যতম প্রধান শর্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘অতীত ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় মুক্ত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রথম এবং সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার এসব বাধা অপসারণে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা সমালোচনাকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি।
যে কেউ চাইলেই যেকোনো মাধ্যমে—সেটা মূলধারার গণমাধ্যম হোক কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই হোক, সরকারের সমালোচনা করতে পারছেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও সরকারের সমালোচনা করা যাচ্ছে। নিকট অতীতে যা ছিল অকল্পনীয়।’
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টা ২০ মিনিটে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সাংবাদিকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য সরকার ইতোমধ্যেই প্রেস কাউন্সিল পুনর্গঠন করেছে। আপনারা জানেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ গুজব ও অপতথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে গুজব। অপতথ্য মোকাবেলা করার জন্য সাংবাদিকদের সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকার আমলে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, যা পরে সাইবার নিরাপত্তা আইন রূপে আবির্ভূত হয়েছিল। আমরা এই আইনটি বাতিল করেছি। এই আইনের অধীনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা বাতিল করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে এটি একটি বড় অগ্রগতি। নতুন যে আইন প্রণীত হয়েছে তাতে আগের আইনের নিবর্তনমূলক ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে।
আগের আইনের আওতায় করা ৯৫ শতাংশ মামলাই এসব ধারায়। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন এই আইন প্রণয়নের পর সাংবাদিকদের আইনি হয়রানি বন্ধ হবে।’
গত বছর মানুষের প্রতিবাদকে স্তব্ধ করে দিতে ফ্যাসিবাদী সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল, যাতে গোপনে তারা দমন-নিপীড়ন, হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার সাইবার সুরক্ষা আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে, বলেন তিনি।
মন্তব্য করুন