বগুড়ার ধুনটে নজরুলের সন্দেশে লেগে আছে ৬০ বছরের স্বাদ

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : গরুর খাঁটি দুধ, চিনি আর সাদা এলাচ-এই তিন উপাদানে তৈরি হয় বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিখ্যাত সন্দেশ, যা স্থানীয়ভাবে নজরুলের সন্দেশ নামে পরিচিত। প্রায় ৬০ বছর আগে নজরুলের বাবা হোসেন আলী শুরু করেছিলেন এই সন্দেশ তৈরির পেশা। আর বাবার পাশেই দাঁড়িয়ে শিখেছেন নজরুল (৫৮)। দীর্ঘদিন ধরে বাবার রীতিতেই অনন্য স্বাদের এই সন্দেশ তৈরি করছেন তিনি।
নজরুল ইসলামের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি গ্রামে। গোসাইবাড়ি বাজারে একটি পুরোনো টিনের ঘরে প্রতিদিন সকাল থেকে তিনি সন্দেশ তৈরির কাজ করেন। চুলায় দুধ জ্বাল দেওয়া, ছানা তৈরি আর কড়াই নাড়ার কাজটি নিজ হাতে করেন নজরুল। শুধু মিষ্টি তৈরি নয়, টিকিয়ে রেখেছেন পারিবারিক এক পুরোনো ঐতিহ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল, ত্রি-রত্ম মিষ্টান্ন ভান্ডার নামে টিনের ঘর। পুরোনো দোকান। বাড়তি কোনো চাকচিক্য নেই। ভাঙাচোরা তাকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সন্দেশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেচাকেনা বাড়ছে। প্রতিদিন ভোরে স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয় দুধ। তারপর শুরু হয় সন্দেশ তৈরির কয়েক ধাপের প্রক্রিয়া। প্রথমে দুধ ছেঁকে নেওয়া হয়, পরে জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় ছানা।
আরও পড়ুনছানা ঝুলিয়ে রাখা হয়, পানি ঝরানোর জন্য। এরপর চিনি আর সাদা এলাচের গুড়া মিশিয়ে কড়াইয়ে জ্বাল দেওয়া হয় যতক্ষণ না সন্দেশ দানা বাঁধে। তারপর তা ঠান্ডা করে হাতে তৈরি করা হয় আকৃতি। পুরো প্রক্রিয়াতেই কোনো রকম রাসায়নিক, রঙ বা ফ্লেভার ব্যবহৃত হয় না। প্রতিদিন ৩-৪ কেজি সন্দেশ তৈরি করেন নজরুল। এই সন্দেশ বিক্রির আয়েই চলে তার সংসার।
গোসাইবাড়ির ভোলা মীর জানান, নজরুলের বাবা হোসেন আলীর তৈরি সন্দেশ ছোটবেলা থেকে খেয়ে আসছেন। এখন সন্দেশ তৈরি করেন তার ছেলে নজরুল। স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য আগের মতো রয়েছে। স্থানীয় গৃহবধূ ফাহমিদা আক্তার বলেন, অনেক জায়গার সন্দেশ খেয়েছি। কিন্তু নজরুলের বানানো সন্দেশের স্বাদ একেবারে আলাদা। আসল দুধের ঘ্রাণ পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন