ভিডিও রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

ফের আলোচনায় ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প

ফের আলোচনায় ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: দেশে জ্বালানি তেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) পরিশোধন ক্ষমতা মাত্র ১৫ লাখ টন। বাকি ৫৫ লাখ টন জ্বালানি তেল পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করতে হয় বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে। স্বাধীনতার এত বছরেও জ্বালানি তেলের পরিশোধন ক্ষমতা না বাড়ায় প্রতি বছর বেশি দামে বিপুল পরিমাণ পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করতে হচ্ছে। তবে শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন ইআরএল কর্মকর্তারা।

প্রতিষ্ঠানটি ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে এক লাফে পরিশোধন সক্ষমতা বেড়ে দ্বিগুণ হবে। তখন দেশে জ্বালানি তেল পরিশোধনের সক্ষমতা ঠেকবে ৩০ লাখ টনে।

ইআরএল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি জানান, ইআরএলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই তিনি ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য চেষ্টা করছেন। নকশা, ডিজাইন সব কিছুই প্রস্তুত। এখন অর্থায়নের বিষয়টি সুরাহা হলেই প্রকল্পটির একাংশের কাজ শুরু হবে। বিদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থায়ন নিয়ে কথাবার্তা চলছে বলেও তিনি জানান।

গত ১ জুলাই ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাসিমুল গনি এ কথা বলার পর আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প। তবে এবারও শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখবে কি না সেটি নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। কারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের পর গত এক যুগেরও বেশি সময়ে বিপিসি কয়েক দফা চেষ্টা করেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে দীর্ঘ সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় দফায় দফায় বেড়েছে প্রকল্প ব্যয়। ২০১০ সালে যখন প্রথম প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় তখন প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার কোটিতে। এরপর আরও কয়েক দফায় ব্যয় বেড়ে সর্বশেষ সংশোধিত ডিপিপিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় অবস্থিত দেশের জ্বালানি তেলের একমাত্র সরকারি শোধনাগার ইআরএলের পরিশোধন ক্ষমতা বছরে ১৫ লাখ টন ক্রুড অয়েল। ১৯৬৮ সালে নির্মিত এই পরিশোধানাগারটি ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ব আর কোনো জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার না থাকায় ২০১০ সালে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট (ইনস্টলেশন অব ইআরএল ইউনিট-২) নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার।

আরও পড়ুন

পরিকল্পনা অনুযায়ী, পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারির ২০০ একর জমির এক পাশের ৭০ একর জমিতে দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের কথা। কিন্তু অর্থায়ন জটিলতায় গত এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ইআরএল ইউনিট-২ বাস্তবায়নে ফের উদ্যোগ নিয়েছে বিপিসি। ইতোমধ্যে সংশোধিত ডিপিপির খসড়া জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বিপিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৫ জুন সংশোধিত ডিপিপির খসড়া তারা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। সেখান থেকে প্রকল্প প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে আছে। সেখানে অনুমোদন পাওয়ার পর খুব শিগগির প্রকল্পটি একনেক সভায় উঠানো হবে। একনেক সভায় অনুমোদন পেলেই নির্মাণকাজ শুরু করে দেবে বিপিসি। এজন্য বিনিয়োগকারী খুঁজছে বিপিসি।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘জ্বালানি তেল পরিশোধনের সক্ষমতা বাড়াতে আমরা ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ দ্রুত শুরু করতে কাজ করছি। গত ২৫ জুন সংশোধিত ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। অর্থায়নের বিষয়টি সুরাহা হলে দ্রুত বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়ে যাবে।’ কোন কোন প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইআরএলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি), চীনা ব্যাংকসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এরমধ্যে এআইআইবির সঙ্গে আলোচনা এগিয়েছে। অর্থায়ন নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এটি নিশ্চিত হলেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দরপত্র আহ্বান করবে বিপিসি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার শাজাহানপুরে ফোরকান হত্যা মামলায় আ’লীগের দুই নেতা গ্রেফতার

বগুড়ার শেরপুরে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আতাউর রহমান গ্রেফতার

দিনাজপুর পৌরসভার আশি ভাগ সড়কেরই বেহাল অবস্থা

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার নাগর নদে অবাধে চলছে পোনা মাছ নিধন

মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

বগুড়ার সোনাতলায় কৃষকলীগ নেতা মতিন গ্রেফতার