ভিডিও শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

ক্যাম্পাসে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে তোলপাড় পশ্চিমবঙ্গ

ছবি : সংগৃহীত,ক্যাম্পাসে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে তোলপাড় পশ্চিমবঙ্গ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলকাতার কসবায় একটি ল কলেজে এক ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে পশ্চিমবঙ্গে। গত বছর আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আবার একই ধরনের অভিযোগ সামনে আসায় নারীর নিরাপত্তার প্রশ্নটি ফের সামনে এসেছে।

কসবার ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।


এই ঘটনার তদন্তে শনিবার স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী জানিয়েছিলেন, প্রথমে তাকে কলেজের ইউনিয়ন রুমে যৌন হেনস্তা করা হয় এবং গার্ড রুমে (নিরাপত্তারক্ষীর জন্য নির্দিষ্ট কক্ষ) নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। কলেজের নিরাপত্তারক্ষী বিষয়টা সম্পর্কে অবগত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্ট মাসে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক-শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, ঘটনার তদন্তে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্দোলন শুরু করেন নিহত চিকিৎসকের সতীর্থরা। পরে সেই আন্দোলনে যোগ দেন অন্যান্য কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক এবং নাগরিক সমাজ।

কেন কর্মক্ষেত্র এবং অন্যত্র নারীরা সুরক্ষিত হবেন না, সেই প্রশ্ন তুলে ডাক দেওয়া হয় ‘রাত দখলের কর্মসূচি’। রাস্তায় নামেন লাখো নারী, পুরুষ এমনকি শিশু ও প্রবীণ নাগরিকেরাও বাদ যাননি। কয়েক মাস ধরে চলা সেই প্রতিবাদের আঁচ এড়িয়ে যেতে পারেনি রাজ্যে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলও।

ওই প্রতিবাদের অন্যতম মুখ ডা. অনিকেত মাহাত বলেন, আন্দোলনে আমাদের যে কয়টা দাবি-দাওয়া ছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত এবং রাজনৈতিক প্রভাবহীন একটা লেখাপড়া ও কাজের পরিসর। সেই সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি জানিয়েছিল সরকার।

‘কিন্তু এক বছর যেতে না যেতে আমাদের আরও একবার সেই একই রকম ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কোথায় নিরাপত্তা? কোথায় রাজনৈতিক ছোঁয়াচ-মুক্ত শিক্ষাক্ষেত্র বা সরকারি হাসপাতাল?’

আরও পড়ুন

অন্যদিকে, সবশেষ ঘটনাটিকে ঘিরে রাজনৈতিক ময়দান আবারও সরগরম। বাম, বিজেপিসহ বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছে। শনিবার কলকাতার একাধিক জায়গায় তাদের প্রতিবাদ মিছিলকে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কসবার ঘটনায় শুক্রবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের মধ্যে দুজন বর্তমান ছাত্র। একজন সাবেক শিক্ষার্থী ওই কলেজে অস্থায়ী পদে নিযুক্ত। তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের নেতা হিসেবে ওই কলেজে তার (সাবেক ছাত্রের) বেশ প্রভাব রয়েছে বলে জানা গেছে।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অবশ্য অভিযুক্তর থেকে নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখেছে এবং নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবি জানিয়েছে।

আরজি করের পর আবারও শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তার অভাবের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।

সাবেক আইপিএস কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, কলেজ ইউনিয়ন তেলবাজি এবং ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে, তার একটাই কারণ হলো এরা রাজনৈতিক মদতপুষ্ট। এখানে যে মূল অভিযুক্ত সে সাবেক ছাত্র, কিছুদিন আগে অস্থায়ী পদে তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কলেজ ছাড়ার পরেও তার প্রভাব প্রতিপত্তি বজায় আছে। এর বিরুদ্ধে কিন্তু আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে, অথচ সে সহজে চাকরি পেয়ে গেল? এটা রাজনৈতিক মদত ছাড়া হতে পারে?

‘আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতেও অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ছিল। কিন্তু থাকতো পুলিশ ব্যারাকে, ব্যবহার করতো পুলিশের মোটরবাইক, যা বেআইনি। হাসপাতালের ভেতরে তার অবাধ আনাগোনা। কী অদ্ভুত মিল!’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার সোনাতলায় ধসে যাওয়ার শঙ্কায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার রাস্তা সংস্কার কাজ

বগুড়ায় কিশোর গ্যাং লিডার সিফাত ছোরাসহ গ্রেফতার

বগুড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় এস্কেভেটর এবং দুটি খননযন্ত্র জব্দ

বগুড়ার শেরপুরে মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান

বগুড়ার সান্তাহারে মোবাইলে কথা বলার খেসারত, ঝরে গেল প্রাণ

বগুড়া প্রেসক্লাব নির্বাচনে রানু সভাপতি ও কালাম সম্পাদক নির্বাচিত