অধরা সব আসামি
বগুড়ায় বিদ্যুৎ হত্যকান্ডে অংশ নেয় বাবা ও ছেলেসহ ৬ দুর্বৃত্ত

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় বিদ্যুৎ হত্যাকান্ডে অংশ নেয় বাবা-ছেলেসহ ৬ জন। মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ার জের ধরে এই দুর্বৃত্তরা বিদ্যুৎকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। তবে হত্যাকান্ডের চারদিন পেরিয়ে গেলেও এই খুনিরা রয়েছে এখনও অধরা।
কোন আসামিকেই ধরতে পারেনি পুলিশ। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় শহরের কাটনারপাড়ায় বিদ্যুকে হত্যা করে পালিয়ে যায় প্রধান আসামি রনি, তার ছেলে রুকু ও ভাড়াটিয়ে প্রতিবেশি শাওনসহ ৬ দুর্বৃত্ত। গত ১৩ জুন শুক্রবার বিকেলে কাটনারপাড়া ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকায় রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩৩) কে হত্যা করা হয়। নিহত বিদ্যুৎ শহরের বৃন্দাবন দক্ষিণপাড়ার দুলাল শেখের ছেলে। হত্যাকান্ডের পর দুলাল শেখ এই তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিন দুর্বৃত্তসহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩৩) কাটনারপাড়া ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন স্থানে জাহিদের ঘর ভাড়া নিয়ে অটোরিকশার গ্যারেজ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। মামলার প্রধান আসামি রনি তার বন্ধু ছিল। রনি বিদ্যুতের গ্যারেজ ইয়াবা বিক্রির স্পট বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু এতে বাধা দেন বিদ্যুৎ।
তিনি কিছুতেই তার গ্যারেজে ইয়াবা বিক্রি করতে দিবেন না বলে রনিকে সাফ জানিয়ে দেন। পরে এনিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। বিদ্যুৎ রনির কাছে বন্ধু থেকে শত্রু বনে যান। এই বিরোধের জের ধরে রনি তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে রনি ও তার সহযোগীরা হত্যার মিশনে নামে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে ইয়াবা ব্যবসায়ী রনির ‘এক ভাবি’র মাধ্যমে মোবাইল ফোনে বৃন্দাবনপাড়ার বাড়ি থেকে কাটনাপাড়ায় ঈদগাহ সংলগ্ন গ্যারেজের পশ্চিম পাশের গলিতে ডেকে নেয়া হয় বিদ্যুৎকে।
এরপর সেখানে রনির নেতৃত্বে ওই ৬ দুবৃত্ত গত ১৩ জুন শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে বার্মিজ চাকু, লোহার রড ও এসএস পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এসে বিদ্যুতের ওপর হামলা চালায়। তারা লোহার রড,এসএস পাইপ দিয়ে মারপিট করে গুরুতর জখম করে বিদ্যুৎকে। এক পর্যায়ে প্রধান আসামি রনি বার্মিজ চাকু দিয়ে রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎকে পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে।
আরও পড়ুনছুরিকাঘাতে বিদ্যুতের পেটের ভুড়ি বের হয়ে যায়। ছুিরকাঘাতের সময় অন্য আসামিরা বিদ্যুতের দু’হাত ধরে রেখেছিল। পরে বিদ্যুৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামিরা চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন বিদ্যুৎকে উদ্ধার করে একটি অটোরিকশা করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বাদি মো. দুলাল শেখ (৫৮) বলেন, তার ছেলে বিদ্যুৎ হত্যাকান্ডের চারদিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা কেউ ধরা পড়েনি। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। আসামিরা ধরা না পড়ায় তিনি তার নিরাপত্তা নিয়েও শংকিত।
তবে মামলার তদন্তকারী এসআই তন্ময় কুমার বর্মণ বলেন, মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় বিদ্যুৎকে হত্যা করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে হত্যার আরও কারণ থাকতে পারে। সব তথ্যই যাচাই করা হচ্ছে। সেইসাথে আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন