যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যুদ্ধজাহাজ ও ড্রোন মোতায়েন ভেনেজুয়েলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র মাদকচক্র দমনের নামে একাধিক যুদ্ধজাহাজ ভেনেজুয়েলা উপকূলের কাছে পাঠানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ওপেন চ্যালেঞ্জ জানালেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভেনেজুয়েলা এরই মধ্যে তাদের ক্যারিবীয় উপকূল রক্ষায় যুদ্ধজাহাজ ও নজরদারি ড্রোন মোতায়েন করেছে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় জানান, সমুদ্র উপকূলে ড্রোন টহল জোরদার করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলাকে রক্ষায় বৃহৎ নৌযান ও ড্রোন পাঠানো হয়েছে দেশের সীমানার উত্তর দিকের জলসীমায়। এর আগে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন লাতিন আমেরিকার মাদকচক্র দমনের জন্য তিনটি উভচর যুদ্ধজাহাজ ক্যারিবীয় সাগরে মোতায়েনের ঘোষণা দেয়। এই অভিযানে ২টি যুদ্ধজাহাজ, ১টি গাইডেড মিসাইল ক্রুজার এবং ১টি পারমাণবিক সাবমেরিনসহ ৪ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প সম্প্রতি মাদক চোরাচালানের অভিযোগ এনে মাদুরোর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার হিসেবে ২৫ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার করা হয়। একই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেলোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে মাদুরো ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলায় মাদক উৎপাদনের কোনো সুযোগ নেই এবং যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পিতভাবে তার সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দেশে মাদক সংকট সমাধানে ব্যর্থ হয়ে ভেনেজুয়েলার ওপর অন্যায়ভাবে দোষ চাপাচ্ছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, পূর্বাঞ্চলে চালানো অভিযানে বেশ কয়েকটি অবৈধ জাহাজঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে যেখানে অপরাধীরা মাদক পরিবহনের জন্য আধাসাবমেরিন ও নৌকা প্রস্তুত করছিল।
আরও পড়ুনএদিকে, জাতিসংঘে দেওয়া এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক তৎপরতাকে আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি বলে অভিহিত করেছে ভেনেজুয়েলা। পাশাপাশি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েনকে স্পষ্ট ভয়ভীতি প্রদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটি। যে কোনো মূল্যে এই হুমকি প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরাসরি মার্কিন আগ্রাসন বা হামলার আশঙ্কা কম হলেও এই সামরিক তৎপরতার মাধ্যমে ওয়াশিংটন মাদুরো সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
মন্তব্য করুন