ভোট আসে, প্রতিশ্রুতি দেয় তবুও সেতু হয় না নদীর

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : টাঙ্গন নদীর ওপর কেবল একটি সেতু। এই একটি সেতুর অভাবে আটকে আছে প্রায় হাজারো মানুষের স্বপ্ন, জীবন ও জীবিকা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন বাঁশের তৈরি একটি পুরোনো ভাঙা সাঁকো দিয়ে।
বছর ঘুরে বছর যায়, আসে নির্বাচন, আসে প্রতিশ্রুতি এইবার হবে সেতু। কিন্তু ভোট শেষে ফের ফিরে আসে সেই পুরনো দৃশ্যপট, আর বুক ধুকপুক করা সাঁকো পারাপার। শুধু শুকনো মৌসুম নয়, বর্ষায় দুর্ভোগ চরমে। তখন সাঁকো নয়, আশ্রয় হয় নৌকা। শিশু, বৃদ্ধ, রোগী, গর্ভবতী নারীর সবাইকে নিতে হয় জীবন বাজি রেখে যাতায়াতের সিদ্ধান্ত।
গত বৃহস্পতিবার পালপাড়া ঘাটে মানুষের ভিড়। স্কুলগামী শিশুরা বইয়ের ব্যাগ কাঁধে সাঁকো পার হচ্ছে থরথর করে। কেউ বাজারে যাচ্ছেন সাইকেল নিয়ে, কেউ রোগী নিয়ে ফিরছেন মোটরসাইকেলে। সেতু না থাকায় কোনো বড় যানবাহন তো চলেই না।
কৃষিপণ্য শহরে পাঠানোও যেন যুদ্ধের মতো। কৃষক রিয়াজুল ইসলাম বললেন, সবজি তো অনেক হয়, কিন্তু ঠিকমতো শহরে নিতে পারি না। দামও কম পাই। তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শহিদুল ইসলাম যুক্ত করলেন, প্রতিবার নেতারা আসেন, ছবি তোলেন, বলেন এইবার ব্রিজ হবেই। ভোট শেষ, মানুষ ভুলে যায়। কিন্তু আমরা থেকে যাই বাঁশের সাঁকোয়।
আরও পড়ুনশুধু কৃষক নয়, সবচেয়ে বেশি বিপদে শিক্ষার্থীরা। একটু বৃষ্টি হলেই সাঁকো ভয়ানক পিচ্ছিল হয়ে যায়। বছরের পর বছর ধরে নির্বাচিত হয়েছেন একাধিক এমপি, চেয়ারম্যান। ১৯৯৮ থেকে ২০২৪ গুনে গুনে পাঁচ-ছয়জন। কিন্তু সেতুর কাজ আর শুরু হয়নি।
আকচা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শিমলা রানী বলেন, “বাঁশের সাঁকোতে যে ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তা ভাষায় বোঝানো যায় না। সরকার যেন দ্রুত এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।” এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস জানান, “এই ঘাটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি একনেকে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।”
মন্তব্য করুন