ইন্টারের মাঠে আজ বার্সা’র ফাইনাল পরীক্ষা

স্পোর্টস ডেস্ক : চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে মিলানের সান সিরোতে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হচ্ছে বার্সেলোনা। প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র হওয়ার পর, দ্বিতীয় লেগের এই ম্যাচ পরিণত হয়েছে ফাইনালের আগে আরেক ফাইনালে। মিলানের সান সিরোর জিউসেপ্পে মিয়াৎসা স্টেডিয়াম যেন টগবগ করে ফুটছে এক অবিস্মরণীয় রাতের অপেক্ষায়।
বার্সার ঘরের মাঠে প্রথম লেগের ম্যাচটি ছিল রোলার কোস্টারের মতো। শুরুতে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও হান্সি ফ্লিকের দল দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩-৩ সমতায় শেষ করে। অ্যাওয়ে গোলের নিয়ম এখন আর না থাকায়, বার্সেলোনার জন্য ৩ গোল হজম করা ততটা ক্ষতিকর হয়নি, যতটা আগের নিয়মে হতে পারত। তবে আজ লড়াইটা ইন্টারের মাঠে, যেখানে প্রায় ৮০ হাজার দর্শকের সামনে খেলাটা বার্সার জন্য সহজ হবে না। ইন্টার মিলান তাদের ঘরের মাঠের সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাইবে।
সান সিরোর বিখ্যাত সমর্থক গোষ্ঠী ‘কারভা নর্ড’ বার্সেলোনার জন্য ম্যাচটি কঠিন করে তুলতে চেষ্টার ত্রুটি রাখবে না। ২০১০ সালের স্মৃতিও ইন্টারকে প্রেরণা জোগাবে, সেবার এই মাঠেই সেমিফাইনালে বার্সাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল তারা। তবে ইতিহাস বা পরিসংখ্যান নয়, মাঠের খেলাই নির্ধারণ করবে ফাইনালিস্ট।
সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি ম্যাচটি মূলত বার্সেলোনার শক্তিশালী আক্রমণভাগ বনাম ইন্টার মিলানের চীনের প্রাচীরসম রক্ষণের লড়াই। চলতি চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সা যেখানে ২০ গোল হজম করেছে, সেখানে ইন্টার হজম করেছে মাত্র ৮টি, যার মধ্যে ঘরের মাঠে ৬ ম্যাচে মাত্র ৩টি। এই জমাট রক্ষণ ভাঙা বার্সার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে কোচ ফ্লিককে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ প্রতি-আক্রমণে ইন্টার কতটা ভয়ঙ্কর, তা প্রথম লেগেই দেখা গেছে। আক্রমণ ও রক্ষণের সঠিক সমন্বয় খুঁজে বের করাই হবে তার মূল কাজ।
আরও পড়ুনবার্সেলোনার আক্রমণের মূল ভরসা থাকবেন তরুণ উইঙ্গার লামিন ইয়ামাল। প্রথম লেগে তাকে ডাবল মার্কিং করেও আটকানো যায়নি। আজও তার পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় থাকবে বার্সা সমর্থকরা। ইয়ামালকে আটকাতে বেশি মনোযোগ দিলে রাফিনিয়া বা ফেরমিন লোপেজের মতো খেলোয়াড়রা ফাঁকা জায়গা পেয়ে যেতে পারেন। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রাফিনিয়া যেকোনো মুহূর্তে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। বার্সার জন্য বড় সুখবর হলো, চোট কাটিয়ে এই ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে তারকা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কির। তার উপস্থিতি বার্সার আক্রমণকে আরও শাণিত করবে এবং ইয়ামাল-রাফিনিয়ার ওপর থেকে গোল করার চাপ কমাবে। মাঝমাঠে পেদ্রি এবং ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং বার্সা’র ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করবেন। খেলা তৈরি করা এবং ইন্টারের রক্ষণ ভাঙার গুরুদায়িত্ব থাকবে পেদ্রির কাঁধে। তবে বার্সার মূল চিন্তার কারণ রক্ষণভাগ। জুলস কুন্দের চোট দলকে বেশ ভোগাতে পারে কারণ সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দারুণ ছন্দে ছিলেন এবং ইয়ামালের সাথে তার বোঝাপড়াও ছিল চমৎকার। কুন্দের অভাব কীভাবে পূরণ করা হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ইন্টার মিলানের মাঠে জয় পেতে হলে বার্সেলোনাকে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। কৌশল, স্নায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ আর খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত নৈপুণ্যই গড়ে দেবে ম্যাচের ভাগ্য। এক রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর কোন দল হাসবে শেষ হাসি আর পাবে ফাইনালের টিকিট, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন