ভিডিও শনিবার, ০৩ মে ২০২৫

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আলু সংরক্ষণের কার্ড সংকটে উদ্বিগ্ন আলু চাষিরা

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কোল্ড স্টোরে আলু সংরক্ষণ সংকটে উদ্বিগ্ন আলু চাষিরা। গত বছরগুলোর তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ আলু চাষ করে স্টোর কর্তৃপক্ষের সিন্ডিকেট কারসাজির কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা। উপজেলা কৃষি বিভাগের ধারণা গড় ফলন অনুযায়ী এবার ১ লাখ মেট্রিক টনের বেশি আলু হিমাগারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কৃষকের ঘরে থাকতে পারে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৮ হেক্টরের অধিক জমিতে। ফলন অনুযায়ী আবাদকৃত জমি থেকে পাওয়া যাবে ২ লাখ ৪ হাজার ৯৯৬ টন আলু।  পক্ষান্তরে উপজেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য ৪টি হিমাগারে ৩৬ হাজার ৫শ’ টন আলু সংরক্ষণ করা যাবে।

সে অনুযায়ী চাষিদের উৎপাদিত ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৬ মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণের বাইরে থেকে যাচ্ছে। 
এদিকে মাঠের আলু উত্তোলন হওয়ায় এবং অতিরিক্ত আলু আবাদের কারণে কৃষকরা হিমাগার থেকে আলু সংরক্ষণের কার্ড সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখতে পায় কোন কোন হিমাগারের কার্ড শেষ হয়ে গেছে। এতে করে আলু চাষিরা তাদের উৎপাদিত আলুু নিয়ে হতাশায় পড়েছে। অধিকাংশ কৃষকের দাবি, হিমাগার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ী, মজুতকারীরা আলু সংরক্ষণের স্লিপ আগেই সংগ্রহ করেছে। ফলে সাধারণ চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছে।

কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার বকচরের হিমাদ্রী লিমিটেডে গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ-১, মদনপুরে এপেক্স এগ্রিসায়েন্স লিমিটেড, সূর্যগাড়িতে গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ-২ ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলু সংরক্ষণের স্লিপ সংগ্রহ করতে এসে স্লিপ না পেয়ে  ফিরে যাচ্ছেন কৃষক।

উপজেলার দরবস্ত  ইউনিয়নের গোশাইপুর গ্রামের আলু চাষি তবিবর রহমান বলেন, আলু সংরক্ষণের কার্ডের  জন্য ৩ দিন হিমাগারে গিয়েছি। স্লিপ না পেয়ে ফিরে এসেছি। একই ধরণের অভিযোগ সাপামারা ইউনিয়নের বাবলু, মোজাম, সোরাফ, রুবেল মিয়ার। তারা বলেন, স্টোরের লোকজন চাষিদের নয়, মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে আলু রাখার স্লিপ  আগেই  প্রদান করেছেন।  এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষকরা আলুু রাখার সুযোগ পাবে না। আলু সংরক্ষণ করতে না পারলে নিশ্চিত ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

তবে এসব বিষয় নাকচ করে হিমাদ্রী লিমিটেডের ম্যানেজার মোজাম্মেল হক বলেন, বুকিং স্লিপ শেষ হয়ে গেছে। বিগত বছরের মত এ বছরও ব্যবসায়ীদের বুকিং স্লিপ দেয়া হয়েছে। তবে সেটা পরিমাণে অনেক কম। কালো বাজারে বুকিং স্লিপ বিক্রির করা হয়নি।

গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার সজিব বলেন, এবছর আমরা স্থানীয় কৃষকদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি। মজুতদারদের কোন কার্ড দিচ্ছি না। কৃষকেরা ৫ থেকে ১০ বস্তা করে আলু নিয়ে এলে কোল্ড স্টোরেজে রাখার কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের দুটি স্টোরের ধারণ ক্ষমতা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বস্তা। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার বস্তা আলু বুকিং হয়েছে।

আলু সংরক্ষণের ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মেহেদী হাসান বলেন, অধিক আলু উৎপাদনের কারণে কিছু আলু স্টোরের বাইরে থাকতে পারে। তবে কৃষকদের বীজ আলু সংরক্ষণের ব্যাপারে আমাদের জানালে আমরা আলু রাখায় সহায়তা করবো। এছাড়াও অতিরিক্তি আলু প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকরা কমপক্ষে তিন মাস পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করতে পারবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নওগাঁর সাপাহারে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

উত্তেজনার মাঝেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পাকিস্তানের

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাস-মিনিবাস শ্রমিকদের মানববন্ধন 

স্লোগানে স্লোগানে আওয়ামী লীগ নি.ষিদ্ধে.র ডাক | NCP | Nahid Islam | Sarjis | Daily Karatoa

আওয়ামী লীগের বিষয় অমীমাংসিত রেখে কোনো নির্বাচন হবে না: আখতার | Akhter Hossain | NCP | Daily Karatoa

নৌকা মার্কাকে দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে: নাহিদ | NCP | Nahid Islam | Daily Karatoa