ভিডিও শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪

শাজাহানপুরে কবর থেকে যুবদল নেতার লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে গেলেন ম্যাজিস্ট্রেট  

শাজাহানপুরে কবর থেকে যুবদল নেতার লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে গেলেন ম্যাজিস্ট্রেট , ছবি: সংগৃহীত

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : আদালতের নির্দেশে বগুড়ার শাজাহানপুরে যুবদল নেতা ফোরকান আলীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে এসেছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদমান আকিফ। কিন্তু পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের অনুরোধে লাশ উত্তোলন না করেই তিনি ফিরে গেলেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের ঘাসিড়া সুফিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে শাজাহানপুর থানার ওসি ওয়াদুদ আলম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ করিম সঙ্গীয় ফোর্সসহ উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদমান আকিফ জানান, আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করতে আসার পর ফোরকান আলীর স্বজনরা জানান তারা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানাবেন এবং আদালতে মৃত্যুর সঠিক কারণ অবহিত করবেন মর্মে সময়ের আবেদন করেন। এমতাবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের সময় আবেদন আমলে নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর সকালে শাজাহানপুরের সাজাপুর মাটির মসজিদ এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে বিএনপি’র ডাকা অবরোধের সমর্থনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ওই সময় র‌্যাব ও পুলিশের টহল দল দেখে বিক্ষোভকারীরা দৌড় দেন। ওই মিছিলে থাকা উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের ঘাসিড়া সুফিপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ফোরকান আলী মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত হন মর্মে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনরা তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।

অপরদিকে, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলে গত সেপ্টেম্বর মাসে খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ইউনুস আলী বাদি হয়ে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (শাজাহানপুর) আমলী আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত ১ অক্টোবর শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ছোট বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৬০ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫শ’ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ফোরকানকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। 
অপরদিকে ফোরকান হত্যা মামলা দায়েরের পর তার বাবা আবদুল কুদ্দুস দাবি করেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাই মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিতের জন্য গত ৫ নভেম্বর বগুড়া পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদনও করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন

আবেদনে আব্দুল কুদ্দুস উল্লেখ করেন, তিনি বা তার পরিবারের কেউ এই হত্যা মামলা করেনি। কেউ একজন মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় ফোরকানকে গুলি করে হত্যার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সে সময় গুলির কোন ঘটনা ঘটেনি। ফোরকান পুলিশ দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয় এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এই মৃত্যুতে কারও প্রতি কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই ফোরকানকে দাফন করা হয়।

ফোরকানের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানান, তিনি আদালতে গিয়েছিলেন। আদালত ফোরকান যে হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেছেন সে বিষয়ে কাগজপত্র চেয়েছেন। সেসব কাগজপত্র সংগ্রহ করে আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করবেন তিনি।

শাজাহানপুর থানার ওসি ওয়াদুদ আলম জানান, প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা করেও পরিবারের অনুরোধের কারণে ফোরকান আলীর লাশ উত্তোলন করা যায়নি। 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যত দ্রুত নির্বাচন তত দ্রুত দেশ স্থিতিশীল হবে: খন্দকার মোশাররফ

ক্যালিফোর্নিয়ায় ৭.০ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত

উত্তরের শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

না ফেরার দেশে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ গানের গীতিকার আবু জাফর

দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪

অস্কারে যাওয়া গান নিয়ে যা বললেন ইমন