বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে শহিদ মান্নানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ রিকশা চালক আব্দুল মান্নানের মরদেহ সদরের এরুলিয়া বানদিঘী পূর্বপাড়ায় কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে তার মরদেহ তুলে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিয়ান মুনসীফ এর উপস্থিতিতে মৃত্যুর ৩ মাস ২১ দিন পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিয়ান মুনসীফ বলেন, আদালতের নির্দেশে আব্দুল মান্নানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
এসময় মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আরিফুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। ময়না তদন্ত শেষে যথাযথ মর্যাদায় আবারও তার মরদেহ একই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলেও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জানান।
নিহত আবদুল মান্নানের বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে তিনি শহিদ হন। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে রানা হামিদ।
মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে।
আরও পড়ুনমামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট বেলা একটার দিকে বগুড়া শহরের প্রধান সড়কে বড়গোলা ট্রাফিক মোড় এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রিভলবার, পিস্তল, বন্দুক, ককটেল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানো হয়।
এ সময় ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলাও করা হয়। পিস্তলের গুলি রিকশাচালক আবদুল মান্নানের হৃৎপিণ্ডে বিদ্ধ হয়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় ছাত্র-জনতা হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ আবদুল মান্নানকে উদ্ধার করে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বগুড়া কোর্ট পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন জানান, আব্দুল মান্নান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য ২৮ অক্টোবর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনে বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা গত ৩১ অক্টোবর আবেদন মঞ্জুর করেন।
মামলাগুলো সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহগুলো কবর থেকে উত্তোলনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বগুড়াকে নির্দেশ দেন। সেইসাথে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে যথাযথ মর্যদায় পুনরায় দাফন করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন