কাজ বন্ধ রাখায় বিপাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
পঞ্চগড়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক নির্মাণ কাজ শুরু করেই বরাদ্দের অর্ধেকের বেশি বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ভেঙে পড়েছে ওয়াশব্লকের গ্রিল ও দেয়াল। বিদ্যালয় ভবনের সামনে বালি ফেলে রাখায় অসুবিধায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দেড় বছর ধরে থেমে আছে কাজও।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়নের ভীমদামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মাণের জন্য পিইডিপি প্রকল্পের অধিনে ওয়াশব্লক নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের আগস্টে। ওয়াশব্লকের গ্রেট বিমের কাজ শেষ করার পর আর দেখা যায়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নন্দন প্রেসের। দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকায় বিমের উপর উচিয়ে রাখা লোহার রডেও ধরেছে মরিচা।
একই অবস্থা উপজেলার জোতমনিরাম ও নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। সবগুলো কাজই করছে নন্দন প্রেস নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণ কাজ। তিন প্যাকেজে ৩০ কাজের চুক্তিমূল্য প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখের মধ্যে তুলে নিয়েছেন ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এছাড়াও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক নির্মাণের কাজ নন্দন প্রেস পেলেও সাব ঠিকাদারের মত কাজ দেখাশোনা করছেন তৎকালীন বোদা উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও বর্তমানে জেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে একই পদে কর্মরত নুনী গোপাল সিংহ।
বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজন কুমার সরকার বলেন, দেড় বছর ধরে ওয়াশব্লকের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও কাজ করছে না। সেপটিক ট্যাংকটিও খোলা, তারা খুব কষ্টে পুরনো টয়লেট ব্যবহার করছেন।
আরও পড়ুনঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নন্দন প্রেসের মালিক শফিউল আলম বলেন, যেটুকু কাজ করা হয়েছে তারই অনেক টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। তাই কাজ বন্ধ আছে। জুন পর্যন্ত তারা কাজ করতে পারবেন। হয়তো মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কিছু চার্জ নিবে তারা। এসময় কাজে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এদিকে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুনী গোপাল সিংহ বলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। তাছাড়া ক’জন ঠিকাদার সাইডে (কাজ দেখতে) যান। ম্যানেজারেরাই তো দেখাশোনা করেন। তাদেরও কাজ দেখতে যেতে হয়।
পঞ্চগড় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান বলেন, আগামী জানুয়ারির মধ্যে যেসব ওয়াশব্লকের কাজ বাকি রয়েছে তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আর কাজে অনিয়মের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঠিকাদারদের কাজের উপর ভিত্তি করেই তাদের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। জেলায় মোট ৪৮৭টি ওয়াশব্লক নির্মাণের কাজ হচ্ছে। কাজ শেষ হয়েছে ৩৭৬ টির।
মন্তব্য করুন