বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় আমষট্ট স্মৃতিস্তম্ভ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি : দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর এদেশীয় রাজাকারদের হাতে শহিদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি বিজড়িত আমষট্ট শোলার পুকুরপাড়ে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আমষট্ট গ্রামে শোলার পুকুরটি অবস্থিত। জানা গেছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমষট্ট শোলার পুকুরপাড় ঘেঁষে পূর্ব দক্ষিণ কোনায় ৫ শতক জায়গার ওপর প্রায় ৩৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৫ টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রায় পাঁচ বছরেও যাতায়াতের কোন রাস্তা নির্মিত হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী মতিউর রহমান দেওয়ান পলাশ জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে নির্মিত বৈদ্যুতিক আলো জ্বালিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে আগাছা জন্ম নিয়েছে। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ জানান, স্থানীয় প্রশাসনের স্থান নির্ধারণের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় এবং অরক্ষিত স্থানে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হওয়ায় তা কোন কাজেই আসছে না। স্থানীয় চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন মল্লিক জানান, স্মৃতিস্তম্ভে যাতায়াতের রাস্তার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। জমির দু’পাশের মালিকরা রাস্তার নির্মাণের আপত্তি নেই মর্মে লিখিতও দিয়েছিল।
আরও পড়ুনস্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে পরবর্তীতে আর কোনো উদ্যোগ গ্রহন না করায় রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী আবু তালিম হোসেন জানান, স্মৃতিস্তম্ভে যাতায়াতে আরসিসি রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাক্কলিক স্কিম তৈরী করে তা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ স্কিমটি অনুমোদন না দেওয়ায় রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয় নাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরুখ খান জানান, আমষট্ট্র স্মৃতিস্তম্ভটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল। যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় তা পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে রয়েছে। ফলে বিভিন্ন স্থানে ফাটল সহ চারপাশে আগাছা জন্ম নিয়েছে। রাস্তা নির্মাণ সহ স্মৃতিস্তম্ভটি পূনরায় সংস্কার করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত প্রতিবেদন প্রেরনও করেছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে গোবিন্দপুর গ্রামের হানিফ উদ্দীনের ছেলে শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দীন ও নিলাহালী গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান যুদ্ধে যাওয়ার পথে আমষট্ট শোলার পুকুরপাড়ে একদল রাজাকার তাদের পথ রোধ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দীনকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তার সঙ্গী বীরমুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান সু-কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করে।
মন্তব্য করুন

_medium_1765808704.jpg)



_medium_1765806453.jpg)

