নাটোর বিসিক শিল্পনগরীতে অব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটে বন্ধ তিন কারখানা
নাটোর প্রতিনিধি: ৩৮ বছর পেরিয়ে গেলেও নাটোর বিসিক শিল্পনগরীতে নানা সংকট ও অব্যবস্থাপনার মধ্যেই চলছে কার্যক্রম। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সেবা নিশ্চিত করতে না পারায় শিল্পোদ্যোক্তাদের ক্ষোভ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ না কমানো, ভাঙা সড়ক, পানি-গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতি, ড্রেনেজ সমস্যাসহ মৌলিক সুবিধার অভাবে শিল্পকারখানার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ১৯৮৭ সালে নাটোর পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় ১৫ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় নাটোর বিসিক। ২০০০ সালের মধ্যে ১০৫টি প্লট ও ৩৮টি শিল্প ইউনিট গড়ে ওঠে। এরমধ্যে রসায়নজাত ১৭টি, বস্ত্র ও পাটজাত ১১টি, খাদ্যজাত ৫টি, প্রকৌশল ৪টি এবং ১টি ইউনিট হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাটোরে গ্যাস সরবরাহ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু আর জেলার পাশ দিয়ে গ্যাস পাইপলাইন গেলেও নাটোরে সংযোগ দেওয়া হয়নি। নানা সমস্যায় এরইমধ্যে তিনটি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে, ১৫ বছরের মধ্যে সার্ভিস চার্জ বাড়ানো হবে না বলা হলেও হঠাৎ করেই তা ১৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা করা হয়েছে। আবার গ্যাস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। প্লট না থাকায় নতুন শিল্প স্থাপনও সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
নাটোর জুট মিলসের স্বত্বাধিকারী শ্যামসুন্দর আগরওয়ালা বলেন, যদি গ্যাস সংযোগ বা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা যায় এবং বিসিকের জায়গা বাড়ানো হয়, তাহলে নাটোরে বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতেও বড় ভূমিকা রাখবে। বিসিক ব্যবসায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদার রহমান জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিত নয়। আবার গ্যাস না থাকায় উৎপাদন খরচ কেজিতে ১০-১২ টাকা বেশি পড়ে। লোকসানে পড়ে গত তিন বছরে চারটি মেটাল কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুনশ্রমিক সর্দার মিঠুর দাবি, বিসিকে ২,৫০০-৩,০০০ শ্রমিক কাজ করেন। পুরুষ শ্রমিকরা আট ঘণ্টায় ৫০০-৭০০ টাকা পেলেও নারীশ্রমিকরা পান মাত্র ২২০-২৫০ টাকা। ওভারটাইমে ২০০ টাকা বাড়ে। বাজারদরের তুলনায় এটি খুব কম।
নাটোর বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, নাটোর বিসিক ‘বি’ গ্রেডের হওয়ায় এখানকার সার্ভিস চার্জ অন্যান্য জায়গার তুলনায় কম। পানি নিষ্কাশন ও সড়ক সংস্কারের বাজেট এসেছে। খুব শিগগির কাজ হবে। তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের মজুরি দক্ষতার ওপর নির্ভর করে, মাসিক মিটিংয়ে তা পর্যালোচনা করা হয়।
নাটোরের জেলা প্রশাসক ও বিসিক সভাপতি আসমা শাহীন জানান, ২০০৮ সালে বিসিকের জায়গা সম্প্রসারণের আবেদন পাঠানো হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি। আশপাশে খালি জমি না থাকায় সম্প্রসারণ আটকে আছে। জমি পাওয়া গেলে অধিগ্রহণ করে বিসিকের আয়তন বাড়ানো হবে।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক
_medium_1765463460.jpg)
_medium_1765461260.jpg)
_medium_1765460496.jpg)
_medium_1765459913.jpg)
_medium_1765459005.jpg)

