যুদ্ধের বাস্তবতায় স্বপ্নভঙ্গ, ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের বাঁচার লড়াই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বই-খাতা হাতে হাঁটার স্বপ্ন ছিল রাযান আল সাঈদির। কিন্তু ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ সেই স্বপ্নকে থামিয়ে দিয়েছে। ২০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী এখন রাফাহ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে পানির লাইনে দাঁড়িয়ে, তাঁবুর নিচে রোদ-ঝড় সহ্য করেই দিন কাটাচ্ছেন। তার মতো হাজারো শিক্ষার্থী এখন নিরাপদ আশ্রয়েই দেখছেন নতুন স্বপ্ন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় সাত মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম। ছোট্ট এই ভূখণ্ডে স্কুল-কলেজ সব থেমে গেছে। যে ১২টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল সবই ধ্বংস। রাযান যে আল-আকসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, সেই ক্যাম্পাসেই এখন আশ্রিত মানুষের ভিড়।
রাযান বলেন, “এখন আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার কথা ছিল, অথচ এসেছি পানি আনতে। এমন অবস্থা কখনও ভাবিনি।”
কেবল শিক্ষার্থীই নয়, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শিক্ষকদের জীবনও। গবেষণা পদ্ধতির শিক্ষক ৫৩ বছর বয়সী ফায়েজ আবু হাজ্জার গত বছরের এপ্রিল থেকে পরিবার নিয়ে এই ক্যাম্পাসের অস্থায়ী তাঁবুতেই বসবাস করছেন। দুর্বল ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন বলে তিনি জানান। বর্তমানে এই ক্যাম্পাসে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৩৭ হাজার মানুষ।
শিক্ষার্থীদের মতে, অনলাইন ক্লাস কিছুটা ভরসা দিলেও প্রকৃত শিক্ষার বিকল্প নয়। যুদ্ধবিরতির মাঝেও চলমান আগ্রাসনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ব্যাপক ধ্বংসের কারণে আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া গাজা পুনর্গঠন অসম্ভব এবং এতে কয়েক দশক সময় লাগতে পারে। তাই রাযানের মতো হাজারো শিক্ষার্থী এখন আর বই-খাতার স্বপ্ন নয়—প্রতিদিন বাঁচার লড়াই নিয়েই চলছেন। ধ্বংসস্তূপের ওপারে তাদের স্বপ্ন আবার ফিরবে কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
মন্তব্য করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক







