আজ বিশ্ব ডায়বেটিস দিবস
সারাবিশ্বে প্রতি ৯ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত
স্টাফ রিপোর্টার : সারা বিশ্বের মত বর্তমানে বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস মহামারি আকার ধারন করেছে। আইডিএফ ডায়াবেটিস এটলাস (২০২৫) রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ৮৩ কোটি বা তারও বেশি। সেই হিসেব অনুযায়ী বিশ্বে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১১দশমিক ১শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ৯ জনে ১ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার তথ্যমতে ১৯৯০ সাল থেকে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ২০ কোটি থেকে বর্তমানে বেড়ে ৮৩ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। ২০৫০ সাল নাগাদ তা ৮৫ কোটিতে পৌছাতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম।
আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। ‘কর্মস্থলে ডায়াবেটিস সচেতনতা গড়ে তুলুন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত ডায়াবেটিস চিকিৎসার জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, দেশে প্রায় এক কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫৪ লাখ ডায়াবেটিস রোগী আছেন যাদেরকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। সংস্থাটি আশংকা প্রকাশ করেছে বর্তমান ধারায় চলতে থাকলে ২০৪৫ সালে দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। নিরব প্রাণঘাতি এই রোগের সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে মৃত্যুঝুঁকিপূর্ণ জটিলতা হতে পারে বলছেন স্বাস্থ্য বিশ্লেষকগণ। তারা জানান, বিশ্বের ১০ স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। বাংলাদেশ ডায়বেটিস সমিতির তথ্যমতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতি ৪ জনের ৩ জন বাস করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে।
বগুড়া ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্য সেবা হাসপাতাল, স্বাস্থ্যসেবা হাসাপাতাল মাটিডালী ও তালোড়া স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন এই কেন্দ্র গুলোতে নতুন পুরাতন মিলে প্রায় তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ রোগী আসেন সেবা নিতে। এই সেবাকেন্দ্র গুলোতে রেজিস্টার্ড রোগী আছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৪০ জন রোগী। গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৭৪৩ জন। এরমধ্যে শুধুমাত্র ডায়াবেটিস রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৭ হাজার ৯শ’ ১০ জন। নিয়মিত রোগীদের মধ্যে ৭০ শিশুও চিকিৎসা নিয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে ডায়াবেটিস আক্রান্তরা ডায়াবেটিস, ডায়াবেটিস আক্রান্তদের গাইনি, চোখ ও দাঁতের চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বগুড়া ডায়াবেটিক হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বিভাগের পরিচালক ডা: মোস্তফা কামাল জানান, এটা একটা অনির্মূলযোগ্য রোগ। মানুষের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রম না করা,মানসিক চাপ,ধুমপান,গর্ভকালীন বিভিন্ন সমস্যা ও বংশগতভাবে এ রোগের ব্যাপক বিস্তার ঘটছে। এই রোগ নিয়ন্ত্রনে রাখতে নিয়মিত হাঁটা,খ্যাদ্যাভাসের পরিবর্তন,শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানোসহ নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুনহাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, এই হাসপাতালে আসা রোগীদের আর্থিক অবস্তা বিবেচনা করে দু:স্থ রোগীদের জন্য বিনামূল্যে এবং স্বল্পমূল্যে আজীবন চিকিৎসা ও ইনস্যুলিন দেয়া হয়। সমাজকল্যান থেকে ৮৪ জন রোগীদের এই সুবিধা প্রদান করা হয়।
বগুড়া ডায়াবেটিক সমিতির প্রশাসক মোহা: আতাউর রহমান জানান,এই সেবাকেন্দ্রগুলোতে অল্প টাকায় চিকিৎসা এবং নামমাত্র মূল্যে টেস্ট করানো হয়। এছাড়াও গরিব ও দু:স্থ রোগীদের বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে আজীবন চিকিৎসা ও ইনস্যূলিন প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান এই হাসপাতালের নাগরিক সুবিধা ও চিবিৎসাসেবা তরান্বিত করতে এবং এই রোগে আক্রান্তদের সেবা দিতে তিনিসহ প্রতিটি মানুষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক









