দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরে টার্মিনাল নেই, সড়কেই যাত্রী ওঠা-নামা, যানজটে নাকাল সাধারণ মানুষ
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এ শহর দিয়ে প্রতিদিন চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন।
জানা যায়, জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহসাড়কটি উপজেলা শহর দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন।
এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় ফুলবাড়ী থেকে ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, কুয়াকাটা, রাজশাহী, রংপুরসহ প্রতিদিন পার্বতীপুর, সৈয়দপুর, নিলফামারী, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ থেকে ফুলবাড়ী, রংপুর মিঠাপুকুর হয়ে ফুলবাড়ীর সড়ক যোগাযোগ পথে মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে থাকে।
তবে যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোন বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করা হয়। মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের উপর। এতে মহাসড়কের উভয়পাশে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়াও ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফুলবাড়ী উপজেলায় ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। এছাড়া অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুনশিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নিদির্ষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারের বাসগুলো সড়কের উপর যাত্রী উঠা-নামা করে। ফলে সবসময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের একাধিক বৈঠকে টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়টি আলোচনায় এলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শহরের জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, অথচ সড়ক অবকাঠামো অপরিবর্তিত। এতে দুর্ঘটনা ও যানজট দিন দিন বেড়েই চলেছে।
দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্ট্যান্ড শাখার সভাপতি আলহাজ মহসীন আলী সরকার জানান, আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতির কারণে বাস টার্মিনাল নির্মাণ সম্ভব হয়ে উঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয় তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হবে।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসাহাক আলী বলেন, দূর পাল্লার ঢাকা কোচগুলো দাঁড়ানোর কোন নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক









