রংপুরের পীরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে ৯ রোগী শনাক্ত

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের ছয়জন রোগী পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার অপরজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার পীরগঞ্জে শনাক্ত হওয়া ৮ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে আক্রান্ত রোগীর ৬জনের বাড়ি উপজেলার একই গ্রামে। তাদের মধ্যে পুরুষ চারজন, নারী একজন।
তারা শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। এরা হলেন, উপজেলার রামনাথপুরের দ্বারিয়াপুরের আশুরা বেগম(৬৫), রবিউল ইসলাম(৫৫), শাহিন মিয়া (২৩), শরীফ মিয়া (২২), খাসা মিয়া (৫২)। এর আগে গত রোববার চেরাগপুরের রওহাবুল মিয়া (৩২) এর শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে সনাক্ত করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আরও ৩ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত করা হয়।
এর হলেন, দ্বারিয়াপুরের শিল্পি(২৮), মামুন(১৬) ও খোরশেদ ইসলাম(২৫)। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, উপজেলার চেরাগপুর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে সাদেক আলী গত ৪ অক্টোবর অসুস্থ গরু জবাই করে চেরাগপুর গ্রামের ১৮টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করে। এছাড়াও গত ১১ অক্টোবর দ্বারিয়াপুরের টুটুল মিয়া বয়স্ক গরু জবাই করে দ্বারিয়াপুর গ্রামবাসীর মাঝে বিতরণ করে। তিনি আশংকা প্রকাশ করে জানান, ওই ২টি গ্রামে রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে।
আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় টুটুল মিয়ার একটি গাভি অসুস্থ হলে জবাই করে গ্রামবাসীর মধ্যে বিতরণ করা হয়। এরপর গত ১২ অক্টোবর মাংস কাটাকাটির সাথে যারা জড়িত ছিলেন তাদের শরীরে ঘা দেখা দেয়।
আরও পড়ুনঅসুস্থ শিল্পি, মামুন ও খোরশেদ জানান, অসুস্থ গরু জবাই করার পর ৮-৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাননি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, গত সোমবার পর্যন্ত রংপুরের পীরগাছায় ৩৮, কাউনিয়ায় ১৮, মিঠাপুকুরে ১২, গঙ্গাচড়ায় ৭, পীরগঞ্জে ১ জনসহ মোট ৭৮ জন সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পীরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের নতুন আট রোগীর তথ্য এখনো এই হিসাবে যুক্ত হয়নি।
জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা জানান, জেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১১জন। তবে অ্যানথ্রাক্স সন্দেহজনক রোগীর সংখ্যা বেশি। এর কারণ অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগীর নমুনা নিতে হলে শরীরে কাঁচা ঘা থাকতে হয়। কিন্তু ঘা শুকিয়ে গেলে আর নমুনা নেওয়া সম্ভব হয় না। তারা কিছু রোগী পেয়েছেন, যারা ঘা শুকিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন